ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: চীনে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়া ব্যক্তিদের সংখ্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ‘চীনের করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পৃথিবীর জন্য উদ্বেগের।’ এ দিকে, করোনা ভাইরাসে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে নতুন করে আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, ‘এমন সংখ্যা পৃথিবীর জন্য উদ্বেগের।’
তিনি আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা, বেইজিং করোনার বর্তমান প্রাদুর্ভাব মোকাবিলা করতে সমর্থ হবে। কেননা, চীনা অর্থনীতির আকৃতির ফলে দেশটিতে সংক্রমণের সংখ্যা বিশ্বজুড়ে একটি উদ্বেগের বিষয়।’
তার ভাষায়, চীনের জিডিপির আকার, অর্থনীতির আকারের বাস্তবতায় ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পৃথিবীর বাকি অংশের জন্য উদ্বেগের। চীনের করোনা পরিস্থিতি ভাল হওয়া শুধু দেশটির জন্যই নয়, বরং পৃথিবীর বাকি অংশের জন্যও ভাল বলে মন্তব্য করেন নেড প্রাইস।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের কর্তৃপক্ষ দুই জনের মৃত্যুর খবর দেয়ার পর লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে পড়ে। এছাড়া সোমবার দেশটিতে করোনার উপসর্গসহ দুই হাজার ৭২২ জন রোগী শনাক্ত হয়। আগের দিন রোববার (১৮ ডিসেম্বর) ১৯৯৫ জন রোগী শনাক্ত হয়। শনাক্তদের মধ্য থেকে বিদেশ ফেরত নাগরিকদের বাদ দিলে স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ৬৬৫ জন। আগের দিন সংখ্যাটি এক হাজার ৯১৮ ছিল। নতুন এসব রোগী নিয়ে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চীনের মূলভূখণ্ডে শনাক্ত উপসর্গযুক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৮৩ হাজার ১৭৫ জনে।
মূলত: চীনে টিকা নেয় নি এমন লাখ লাখ মানুষ সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ হো নাম লিওংয়ের আশঙ্কা, বিধিনিষেধ শিথিলের পর চীনে করোনা আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু পর্যাপ্ত পরীক্ষা না হওয়ায় অনেকের সংক্রমণ ধরা পড়ছে না। এ শীতে চীনে করোনার তিন ঢেউয়ের আশঙ্কা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের।
এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সংক্রমণের চাপে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েও মানুষের মৃত্যু হতে পারে। মৃত্যুর প্রধান কারণ হতে পারে হার্ট অ্যাটাক, কিন্তু এর অন্তর্নিহিত কারণ হল করোনা।’
বিক্ষোভের মুখে এ মাসেই কঠোর করোনা নীতি শিথিলের উদ্যোগ নেয় চীনা কর্তৃপক্ষ। তবে এমন সময়ে এ উদ্যোগ নেয়া হয়, যখন দেশটিতে দৃশ্যত সংক্রমণ বাড়ছে। হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষার জন্য জ্বর আক্রান্ত রোগীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। সম্প্রতি জিরো-করোনা নীতি শিথিল করার পর দেশটিতে গণহারে করোনা পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দৈনিক শনাক্ত কম পাওয়া যাচ্ছে।