ডাক্তার এম ইয়াছিন আলী: বেশিরভাগ মানুষ প্রায়ই পিঠে ব্যথা অনুভব করে। বিভিন্ন কারণে এ ব্যথা অনুভূত হয়। অনিয়ন্ত্রিত জীবন, পুষ্টির অভাব, সুষম খাদ্য না খাওয়া, কাজের অতিরিক্ত চাপ, স্বাস্থ্য অসচেতনতা ইত্যাদি কারণে মানুষ নিয়মিত পিঠে ব্যথা অনুভব করে। তবে, প্রতিদিন কাজের ফাঁকেও বিভিন্নভাবে পিঠের ব্যথা কমানো যায়।
ঠান্ডা-গরম সেক: আচমকা ব্যথা পেলে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে আইস প্যাক। দিনে দুই-তিন বার ১৫-২০ মিনিট করে ঠান্ডা সেক দিলে ব্যথা কমে যাবে। আস্তে আস্তে ব্যথা কমে এলে দিতে হবে গরম সেক। এতে বেশ ফলপ্রসূ হবে।
স্ট্রেচিং: স্ট্রেচিং ব্যায়াম করলে পেশিতে রক্ত চলাচল বাড়ে। যোগব্যায়ামে খুব ভাল স্ট্রেচিং হয়। ঘুম থেকে ওঠার পর বিছানা ছাড়ার পূর্বেই হাত দুটোকে টানটান করে মাথার ওপর তুলে দিন। পায়ের পাতা ঠেলে যত দূরে পারেন নিয়ে যান; যতক্ষণ সম্ভব ধরে রাখুন। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাত তুলে দিন মাথার উপর; তারপর আস্তে আস্তে নামিয়ে এনে পায়ের পাতা ছুঁয়ে দিন। পা যেন না ভাঙে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
স্ট্রেন্থেনিং এক্সারসাইজ: যারা দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করেন, তাদের পিঠ ও কোমরের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যায়। তাই, কিছু পিঠ ও কোমরের মাংসপেশির স্ট্রেন্থেনিং বা শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী করলে মাংসপেশির শক্তি বাড়বে ও ব্যথা হ্রাস পাবে।
সোজা হয়ে বসা: চেয়ারে একদম পিঠ টানটান করে সোজা হয়ে বসতে হবে। সামনের দিকে ঝুঁকে বা কুঁজো হয়ে বসলে পিঠের ওপর বেশি চাপ পড়ে, তাতে ব্যথা হয়। যারা দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করেন, তারা চেয়ারে একটি ব্যাক সাপোর্ট ব্যবহার করতে পারেন, যা আপনাকে সোজা হয়ে বসতে সাহায্য করবে ও ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পাবে।
বালিশের সঠিক ব্যবহার: আমরা সচরাচর মাথার নিচে বালিশ দিয়ে থাকি; যার ফলে, আমাদের ঘাড়ের স্বাভাবিক বক্রতা কমে যায়, ফলে ব্যথা হয়, বালিশ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম হল একটি মধ্যম সাইজের বালিশ অর্ধেকটুকু মাথার নিচে বাকি অর্ধেকটুকু ঘাড়ের নিচে দেয়া, তাহলে ঘাড়ের স্বাভাবিক বক্রতা ঠিক থাকে ও ঘাড়-পিঠে ব্যথা বহুলাকাংশে কমে যায়।
লেখক: চেয়ারম্যান, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল ধানমন্ডি, ঢাকা।