সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

টি-২০ বিশ্বকাপ: নেপালকে হারিয়ে সুপার এইটে বাংলাদেশ

সোমবার, জুন ১৭, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

সেন্ট ভিনসেন্ট, ওয়েস্ট ইন্ডিজ: কোন সমীকরন কিংবা হিসাব নিকাশের মারপ্যাচে নয়, শেষ ম্যাচ জিতেই সুপার এইট নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দুই পেসার তানজিম হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং নৈপুন্যে ঈদুল আজহার দিন সোমবার (১৭ জুন) টি-২০ বিশ্বকাপের নবম আসরে সুপার এইট নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। সোমবার (১৭ জুন) গ্রুপ ‘ডি’তে নিজেদের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ ২১ রানে হারিয়েছে নেপালকে।

এ জয়ে চার ম্যাচে তিন জয় ও এক হারে ছয় পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থেকে সুপার এইটে খেলবে বাংলাদেশ। নেপাল ছাড়াও গ্রুপ পর্বে শ্রীলংকা ও নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েছিল টাইগাররা। এ প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ তিন ম্যাচ জয়ের নজির গড়ল বাংলাদেশ।

গ্রুপ রানার্স-আপ হয়ে সুপার এইটে গ্রুপ-১এ অস্ট্রেলিয়া (২১ জুন), ভারত (২২ জুন) ও আফগানিস্তানের (২৫ জুন) বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। চার ম্যাচে পূর্ণ আট পয়েন্ট নিয়ে এ গ্রুপ থেকে পূর্বেই সুপার এইট নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

এ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ১৯ দশমিক তিন ওভারে ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এরপর তানজিম-মুস্তাফিজের দারুন বোলিংয়ে নেপালকে ৮৫ রানে গুটিয়ে দেয় টাইগাররা। টি-২০ বিশ্বকাপে এ প্রথম কোন দল এত কম রানের পুঁজি নিয়ে ম্যাচ জিতল। তানজিম চারটি ও মুস্তাফিজ তিন উইকেট নেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম বলে নেপালের পেসার সোমপাল কামির বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে গোল্ডেন ডাক মারেন বাংলাদেশের ওপেনার তানজিদ হাসান। দ্বিতীয় ওভারে নেপালের স্পিনার দিপ্রেন্দ্র সিংয়ের বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত চার রানে সাজঘরে ফিরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সাত রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টায় ব্যর্থ হন আরেক ওপেনার লিটন দাস ও পূর্বের ম্যাচের হিরো সাকিব আল হাসান। দশ রান করা লিটনকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান সোমপাল।
লিটনের বিদায়ে ক্রিজে এসে দুইটি চারে ইনিংস শুরু করলেও নেপালের অধিনায়ক রোহিত পাউডেলের বলে আউট হন নয় রান করা তাওহিদ হৃদয়। চতুর্থ উইকেটে ২০ বলে ২২ রানের জুটি গড়েন সাকিব ও মাহমুদুল্লাহ। নবম ওভারে মাহমুদুল্লাহর রান আউটে ভাঙ্গে জুটি। দুইটি চারে ১৩ রান করেন তিনি। নবম ওভারে দলীয় ৫২ রানে পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১১তম ওভারে পাউডেলের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ২২ বলে ১৭ রান করেন সাকিব। এরপর তানজিম হাসান তিন ও জাকের আলি ১২ রানে বিদায় নিলে ৭৫ রানে অষ্টম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষ দুই উইকেটে ৩১ রান যোগ করে বাংলাদেশের রান ১০০ পার করেন রিশাদ হোসেন, তাসকিন ও মুস্তাফিজ। নবম উইকেটে রিশাদের সঙ্গে ১৩ ও শেষ উইকেটে মুস্তাফিজকে নিয়ে ১৮ রান তুলেন তাসকিন। এতে ১৯ দশমিক তিন ওভারে ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। রিশাদ ১৩ ও মুস্তাফিজ তিন রানে আউট হলেও ১২ রানে অপরাজিত থাকেন তাসকিন। নেপালের সোমপাল কামি, পাউডেল, দিপেন্দ্র ও লামিচানে দুইটি করে উইকেট নেন।

১০৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশের পেসার তানজিম হাসানে তোপের মুখে পড়ে ২৬ রানে পাঁচ উইকেট হারায় নেপাল। ওপেনার কুশল ভার্তেল (৪), অনিল শাহ (০), অধিনায়ক পাউডেল (১) ও সুন্দীপ জোরাকে (১) শিকার করেন তানজিম। এরমধ্যে নিজের দ্বিতীয় ওভারে ডাবল উইকেট মেডেন নেন তানজিম। পরের ওভারে আরো একটি মেডেন উইকেট নেন তানজিম। তানজিমের সঙ্গে উইকেট শিকারে মেতে নেপালের ওপেনার আসিফ শেখকে ১৭ রানে বিদায় করেন মুস্তাফিজুর। সপ্তম ওভারে ইনিংসের অর্ধেক ব্যাটার সাজঘরে ফেরত যাওয়ায় দ্রুতই হারের মুখে ছিটকে পড়ে নেপাল। কিন্তু, ষষ্ঠ উইকেটে ৫৮ বলে ৫২ রান যোগ করে নেপালকে দারুনভাবে লড়াইয়ে ফেরান কুশল মাল্লা ও দিপেন্দ্র। ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে মাল্লাকে আউট করে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু এনে দেন মুস্তাফিজ। দলীয় ৭৮ রানে মুস্তাফিজের ব্রেক-থ্রুর পর আর লড়াই করতে পারেনি নেপাল। ১৯ দশমিক দুই ওভারে ৮৫ রানে গুটিয়ে যায় তারা। দিপেন্দ্র দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন।

চার ওভারে দুই মেডেনে সাত রানে চার উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন বাংলাদেশের তানজিম। দশ ম্যাচের টি-২০ এটিই ক্যারিয়ার সেরা বোলিং তার। এছাড়া, শততম ম্যাচে মুস্তাফিজ চার ওভারে সাত রানে তিন, সাকিব নয় রানে দুই ও তাসকিন এক উইকটে নেন।