ঢাকা: দেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক ফাইভ জি-কে সম্প্রসারণ এবং ফোর জি-কে আরো শক্তিশালী করতে নেয়া হয়েছিল বিটিসিএলের অপটিক্যাল ফাইবার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক প্রকল্প। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৫৯ কোটি দশ লাখ টাকা; যা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর পরিপ্রেক্ষিতে গেল ১৫ সেপ্টেম্বর দরপত্র প্রকাশ করা হয়; যাতে অংশ নেয়ার শেষ সময় ছিল ২ নভেম্বর। এর পর ২০ ডিসেম্বর দরপত্র ওপেনিং ডকুমেন্ট (দরপত্র খোলা) অনুযায়ী দেখা যায়, এ দরপত্রে অংশ নিয়েছে তিন প্রতিষ্ঠান নোকিয়া, জেডটিই এবং হুয়াওয়ে।
পিপিআর (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল) নিয়মানুযায়ী, প্রকল্পের আহ্বায়ক আজম আলী এ প্রকল্পের কারিগরি মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকল্প পরিচালক মো. মঞ্জির আহমেদের কাছে জমা দিয়েছেন; যা পরবর্তী বর্তমান বিটিসিএলের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুজ্জামানের কাছে জমা দেন মঞ্জির আহমেদ। কিন্তু ,আসাদুজ্জামান এ রিপোর্টটি দাপ্তরিকভাবে গ্রহণ করছেন না। কারণ, এ রিপোর্ট গ্রহণ করার এক সপ্তাহের মধ্যে দরপত্র বিজয়ীকে জানানোর বাধ্য বাধকতা রয়েছে পিপিআরে।
এ ছাড়া, জমাকৃত দরপত্রগুলো খুলতেও অনুমতি দিচ্ছেন না আসাদুজ্জামান। আর তার এ কালক্ষেপণকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে প্রকল্পের দরপত্র আবেদনকারী জেডটিই এবং একটি বিশেষ মহল।
গেল ২৪ এপ্রিল ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বরারর প্রকল্প দরপত্রের সরঞ্জামের কারিগরি সক্ষমতার বিষয়ে একটি মনগড়া অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছে জেডটিই; যার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র এ দরপত্রটি বাতিল করে পুনরায় আহ্বান করানো। অথচ এর আগে ৩০ অক্টোবর প্রাক্তন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিবের সভাপতিত্বে সব পরিচালক পর্ষদ, বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রকল্প পরিচালক ও দরপত্রে অংশগ্রহণকারী সব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতিতে বিটিসিএলের অফিসে একটি সভা আয়োজন করা হয়। দরপত্র জমাদানের শেষ তারিখের আগে আয়োজিত সেই সভায় সকলকে আহ্বান করা হয়; যাতে তারা যেন দরপত্র বিষয়ক যে কোন মতামত, অভিযোগ কিংবা পরামর্শ সেই সভায় বিনা দ্বিধায় উল্লেখ করে বা নভেম্বর মাসের তিন তারিখের মধ্যে বিটিসিএল ববাবর লিখিত আকারে জমা দেয়। সেই সভায় কিংবা পরবর্তী কোন প্রতিষ্ঠান কোন আপত্তি পেশ করেনি। বরং, সবকিছু মেনে-বুঝে দরপত্র জমা দিয়েছে। কিন্তু, দরপত্র জমা ও কারিগরি মূল্যায়ন রিপোর্ট তৈরি হওয়ার পর হঠাৎ জেডটিই প্রকল্পটি না পাওয়ার আশংকায় গড়িমসি শুরু করেছে।
এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গ্রাহক এসোসিয়েশনকেও দলে ভিড়িয়েছে তারা। এ প্রকল্পের চলমান প্রক্রিয়া ও কারিগরি বিষয়গুলো তাদের জানার কোন উপায় না থাকলেও তারা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বরাবর একটি ভিত্তিহীন অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছে। সব কিছু মিলে থমকে আছে এ ফাইভ জি রেডিনেস প্রকল্প।
সব নিয়ম মেনে এ পুরো প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করতে গেল ১৬ মে হুয়াওয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিসিএলের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের মহাপরিচালক বরাবর একটি চিঠি দিয়েছে হুয়াওয়ে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিবও এখানে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। কারণ, পূর্ববর্তী দুই সচিব মো. খলিলুর রহমান ও মো. আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে এ দুর্নীতিবাজ দল ব্যাপক শোরগোল তৈরি করেছিল ও শেষমেষ মো. আফজাল হোসেনকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল অন্য বিভাগে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি