দিল্লি, ভারত: সীমান্তের সাম্প্রতিক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র দপ্তরে ডাকার পর দিনই দিল্লিতে বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে তলব করেছে ভারত। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশনারকে তলব করেছে বলে দেশটির সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা করতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে তলব করেছে।
বাংলাদেশ-ভারতের ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমান্তের নির্দিষ্ট পাঁচটি স্থানে ভারত বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করছে অভিযোগে রোববার (১২ জানুয়ারি) ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করা হয়। এর পর দিনই দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে তলব করল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
রোববার বিকাল ৩টার দিকে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছান প্রণয় ভার্মা। সেখানে পররাষ্ট্রসচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে বৈঠক করেন তিনি।
পরে প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে বেড়া নির্মাণের বিষয়ে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে সমঝোতা রয়েছে। আমাদের উভয় দেশের সীমান্ত সুরক্ষাবাহিনী বিএসএফ এবং বিজিবি এই বিষয়ে যোগাযোগ করেছে। আমরা আশা করছি, আমাদের দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ার বাস্তবায়ন হবে এবং সীমান্তে অপরাধ মোকাবিলায় উভয়পক্ষের সহযোগিতামূলক পদ্ধতি থাকবে।’
সীমান্তে উত্তেজনা কেন: গত ৬ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদার কালিয়াচক সীমান্তের শূন্যরেখায় বিএসএফের বেড়া নির্মাণ ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে সেদিন বাংলাদেশের আপত্তিতে বেড়া নির্মাণ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় বিএসএফ। পরে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা হয়।
ভার্মার সঙ্গে বৈঠকে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের প্রচেষ্টা সীমান্তে উত্তেজনা ও অশান্তি সৃষ্টি করেছে জানিয়ে ‘‘গভীর উদ্বেগ’’ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রসচিব জসিম উদ্দিন।
রোববার (১২ জানুয়ারি) সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় আছে। বিজিবি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি সীমান্তের পাঁচটি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ শুরু করেছে। বিজিবি ও স্থানীয় লোকজনের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত ওই সব স্থানে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিএসএফের সঙ্গে বিজিবির যোগাযোগ হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও এ বিষয়ে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে। তারা কূটনৈতিকভাবে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।’
বাংলাদেশ-ভারতের ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে ৩ হাজার ২৭১ কিলোমিটার স্থানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করেছে এবং ৮৮৫ কিলোমিটার স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হয়নি বলে জানান উপদেষ্টা।