নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্টে (এনওয়াইপিডি) ট্রাফিক বিভাগে কর্মরতদের ইউনিয়নের একটি শূন্য পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে জয় পেয়েছেন শিবলী চৌধুরী কায়েস। ট্রাফিক ইউনিয়ন ‘সিডাব্লিউ-লোকাল-১১৮২’এর এ প্রতিনিধি নির্বাচনের ফলাফল গেল ৩ মে ঘোষণা হয়েছে। এতে এনওয়াইপিডির ট্রাফিক বিভাগের কুইন্স-ব্রঙ্কস বোরোর ডেলিগেট হিসেবে ছয়জন প্রার্থীর মধ্যেই সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন কায়েস।
এ নির্বাচন পরিচালনা করে ‘আমেরিকান আর্বিট্রেশান এসোসিয়েশন’। মাত্র একটি শূন্য পদের বিপরীতে যে ছয়জন প্রার্থী ছিলেন তাদের মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশী আর অন্যজন ছিলেন আফ্রিকান-আমেরিকান। ট্রাফিক পুলিশে কর্মরত প্রায় ৫৭২জন ভোট দেন। যাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১২৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন শিবলী চৌধুরী কায়েস। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রঙ্কস ট্রাফিক কমান্ডের শামীম হক পেয়েছেন ১০৯ ভোট, কুইন্স কমান্ড থেকে নির্বাচনী দৌড়ে অংশ নেয়া তৃতীয় আরেক বাংলাদেশী চন্দন দাস পেয়েছেন ১০৪ ভোট, আদিল হোসাইন ৯৫, হোসেইন মোহাম্মদ এম ৫৬ ও সর্বশেষ একমাত্র নন-বাংলাদেশী ও কৃষাঙ্গ প্রার্থী পেয়েছেন পেয়েছেন ৭৮ ভোট। বাতিল হয়েছে তিনটি ভোট।
এনওয়াইপিডির তিনটি শাখার মধ্যে রেগুলার পুলিশ, স্কুলসেফটি ও ট্রাফিক বিভাগে অনেক দুর এগিয়েছেন বাংলাদেশীরা। এরই অংশ হিসেবে এনওয়াইপিডি ট্রাফিক ইউনিয়নেও বেশ শক্ত অবস্থা নেতারা। বর্তমানে প্রেসিডেন্ট, সেক্রটারী ও ট্রেজারারসহ পাঁচজন ডেলিগেট বাংলাদেশী। শুধুমাত্র ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন একজন নন-বাংলাদেশী।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিউইয়র্ক সিটি সিভিল সার্ভিসে যোগ দিয়ে মূলধারার ইউনিয়নে সম্পৃক্ততাকে বাংলাদেশীদের কর্ম দক্ষতারই ফসল বলে মনে করছেন শিবলী চৌধুরী কায়েস।
তিনি বলেন, ‘মূলত অভিবাসিদের স্বর্গরাজ্যখ্যাত নিউইয়র্ক সিটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সিভিল- সার্ভিস কিংবা ব্যবসায়-বাণিজ্যে বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছেন বাংলাদেশীরা। এনওয়াইপিডিতেও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি জানান, কর্ম দক্ষতা ও মেধাগুণে অনেকেই পাচ্ছেন পদোন্নতি। সেই সাথে মূলধারার রাজনীতিসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশীদের এগিয়ে চলা অব্যাহত রয়েছে। যার মধ্যে ট্রাফিক পুলিশ বিভাগও অন্যতম। যেখানে এন্ট্রিলেভেল থেকে শুরু করে অসংখ্য সুপারভাইজারসহ শীর্ষ পদে আসীন হচ্ছেন অভিবাসি ও তাদের সন্তানেরা।
তবে, কমিউনিটির এগিয়ে চলায় বিদেশের মাটিতে দেশীয় রাজনৈতিক চর্চা ভুলে আমেরিকান মূলধারায় ও কর্ম ক্ষেত্রে মনোযোগি হওয়ার কোন বিকল্প নেই বলে অভিমত প্রকাশ করেন কায়েস।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘কমিউনিটির ঐক্যই আগামিতে আর শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবেন বাংলাদেশীরা।’
বলে রাখা বাল, দুটি টিভি চ্যানেল ও জাতীয় দৈনিকে টানা ১৬ বছর কাজ করেছেন শিবলী চৌধুরী কায়েস। প্রায় দশ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হন তিনি। কায়েস শুরু থেকেই নিউইয়র্কে সাংবাদিকতা পেশায় সম্পৃক্ত হোন। কমিউনিটির উন্নয়ন ও এগিয়ে চলায় তার পেশাদারিত্বের সুনাম, সুখ্যাতি সমাদৃত। তিনি নিউইয়র্কের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল টাইম টেলিভিশনের সাবেক বার্তা সম্পাদক। এছাড়া, তিনি প্রবাসী বাংলাদেশী পেশাদার সাংবাদিকদের প্রাণের সংগঠন নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য সচিব হিসেবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। টাইম টিভি ছেড়ে দেয়ার পর তিনি ভিন্ন ধারার টিভি স্টেশন প্রতিষ্ঠা করেন। সাউথ-এশিয়ান টেলিভিশন চ্যানেল টিটি’র কার্যক্রম এখনো চলছে।
শিবলী চৌধুরী কায়েস সাংবাদিকতার পাশাপাশি করোকালীন নিউইয়র্ক সিটির ট্রাফিক পুলিশে যোগ দেন। মাত্র দুই বছরেই সহকর্মীদের আস্থাভাজনে রূপ নেন তিনি। যার ফলে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সহকর্মীদের সাথে নির্বাচনী দৌড়ি জয় পান ট্রাফিক পুলিশের এ নতুন মুখ।
ব্যক্তিগত জীবনে তিন সন্তানের জনক শিবলী চৌধুরী কায়েস সপরিবারে নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে থাকেন।