নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: সাফল্য, গৌরব ও ঐতিহ্যের দুই দশক পেরিয়ে তিন দশকে পদার্পণ করেছে কাস্টম সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট সলিউশন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসজে ইনোভেশন। ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে মাত্র দুইজন মানুষের উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি আজ পৃথিবীজুড়ে পরিচিত কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।
গেল ১৮ আগস্ট জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির ২০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।
এসজে ইনোভেশনের প্রধান কার্যালয় নিউইয়র্ক সিটিতে। কিন্তু, ২০০৬ সালে তারা ভারতের গোয়া শহরে অফিস নির্মাণ করেছেন। ২০০৭ সালে ঢাকা ও ২০১৬ সালে সিলেটে অফিস স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানটি তার কার্যক্রম আরো প্রসারিত করেছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ৮০ জনেরও অধিক দক্ষ পেশাজীবী কর্মী বাংলাদেশে নিবেদিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।।
দুই দশকেরও বেশি দীর্ঘ যাত্রায় এসজে ইনোভেশন পৃথিবীব্যাপী তাদের গ্রাহকদের জন্য সর্বোচ্চ মানের ওয়েব ও সফটওয়্যার সল্যুশন সরবরাহ করে আসছে। বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রথম সফটওয়্যার সলিউশনের দিকে মনোনিবেশ করেছে, যা টেক ইন্ডাস্ট্রিতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।
এসজে ইনোভেশনের গুণগত মান ও প্রতিশ্রুতি বিভিন্ন স্বীকৃতির মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি আইএসও সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে। ক্লাচের স্বীকৃতি পেয়েছে। আএনসি.৫০০ তালিকায়ও স্থান পেয়েছে। এছাড়াও, নিউইয়র্ক সিটিতে মাইনোরিটি অ্যান্ড বিজনেস এন্টারপ্রাইজ (এমবিই) সার্টিফিকেশন লাভ করেছে।
প্রতিষ্ঠানটি ২০০৯ সালে নিবেদিত কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স টিম প্রতিষ্ঠা করেছে। এসজে ইনোভেশনের মান ও গ্রাহক সাফল্যের প্রতি এ অটল অঙ্গীকারই ও দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠানটিকে আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে অধিক বিশ্বস্ত অংশীদার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
এ প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের মূল ভিত্তি হল পরিবর্তীত কোম্পানি কালচার। বি হাম্পল, ডু গ্রেট থিংস টুগেদার, ওয়ার্ক টু মেইক ক্লায়েন্ট সাকসেসফুল, টেইক অ্যাকাউন্টেবিলিটি, অ্যাম্রেস চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড গ্রো ইউরসেল্ফ, হেল্প ইচ আদার- এ কালচারগুলো কোম্পানির মূলমন্ত্র হিসেবে প্রতিফলিত হয়েছে ‘ইমপ্লয়ী হ্যাপিনেস জেনারেটস ক্লায়েন্ট সাকসেস।’ কোম্পানির মিশন হল গ্রাহকের সফলতা মজবুতভাবে নিশ্চিত করার পাশাপাশি কর্মীদের সুখী ও কর্মক্ষম রাখার মাধ্যমে তাদের বৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করা।
এসজে ইনোভেশন বিশ্বমানের প্রযুক্তি ও হেডলেস সিএমএস প্রদানকারীদের সঙ্গে দৃঢ় অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে। যেমন অ্যাকুইয়া, এডব্লিউএস, কনটেন্টস্টাক, কনটেন্টফুল, ভিভা এবং স্টারপিল- এ পার্টনারশিপের মাধ্যমে তারা গ্রাহকদের জন্য সর্বাধুনিক সমাধান দিচ্ছে। এসজে ইনোভেশন সর্বমোট তিন হাজার প্রজেন্ট সম্পন্ন করেছে। যেখানে মেডিকেল, এগ্রিকালচার, ট্রাভেল, নন প্রফিট, পাবলিক সেক্টর, কর্পোরেট, লাইফস্টাইল, এডুকেশন, সেফটি ও সিকিউরিটি শিল্পে বৈচিত্রাময় গ্রাহকদের জন্য কাজ করেছে। এছাডাও প্রজেক্টগুলোর জন্য উল্লেখযোগ্য সংস্থার সঙ্গে যেমন কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস, টিচার্স পে টিচার্স, জ্যানসেন মেডিকেল ক্লাউড ইউকে, ট্যুর প্যাট্রন ও সান ডিয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটি কাজ করেছে।
একটি এআই- ফার্স্ট কোম্পানি হিসাবে এসজে ইনোভেশন কোলাবএআই নামের একটি কাস্টমাইজযোগ্য, সেলফ-হোস্টেড এআই প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে, যা জিপিটি-ফোর, জেমিনি ও ক্লাউডের মত উন্নত এআই মডেল ব্যবহার করছে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী তাদের নির্দিষ্ট প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টমাইজ করতে সক্ষম হবে।
এসজে ইনোভেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাহেদ ইসলাম বলেন, ‘২০ বছর পূর্বে আমরা একটি স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম। আজ আমাদের বার্ষিকী উদযাপনের সময় আমি গর্বিত; যা আমরা অর্জন করেছি বিশেষ করে আমার নিজের দেশ বাংলাদেশে। ঢাকায় ও সিলেটে আমাদের অফিসের উন্নতি দেখে আমি অত্যন্ত খুশি। আমাদের বৈশ্বিক সাফল্য গোয়া ও বাংলাদেশের টিমের নিষ্ঠা ও প্রতিভার প্রমাণ। সামনে আমরা উদ্ভাবন চালিয়ে যাওয়ার এবং এমন এআই সমাধান দেয়ার জন্য উচ্ছ্বসিত; যা আমাদের গ্রাহকদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করবে।’
এসজে ইনোভেশনের আরেক কর্মকর্তা শাহেরা চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের ২০তম বার্ষিকী উদযাপন করতে গিয়ে আমরা যে এত দূরে এসেছি, তা দেখে গর্ব অনুভব করছি। নিউইয়র্ক সিটিতে দুইজনের একটি অপারেশন হিসাবে শুরু থেকে আজকের এসজে ইনোভেশন যা দাঁড়িয়েছে তা অবিশ্বাস্য। বিশেষ করে বাংলাদেশে আমাদের যে প্রভাব তাতে আমি বহু আনন্দিত।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের গোয়া ও বাংলাদেশের টিমের সদস্যদের সহায়তা ও নিবেদন, আমাদের গ্রাহকদের বিশ্বাস এবং উদ্ভাবন ও শ্রেষ্ঠত্বের প্রতি আমাদের অটল প্রতিশ্রুতি ছাড়া এটি সম্ভব হত না।’
প্রযুক্তিগত অগ্রগতির বাইরে এসজে ইনোভেশন পেশাদার বৃদ্ধি ও সম্প্রদায়ের উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখছে ‘টেক অ্যান্ড টেনিস’ ও ‘এআই লক্ষপ্যাড’-এর মত উদ্যোগের মাধ্যমে। বাংলাদেশে এআই প্রতিভা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘এআই লঞ্চপ্যাড’ একটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ। এছাড়াও, এসজে ইনোভেশনের ‘এসজে কমিউনিটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।