শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক জেনোসাইড ও প্রতিরোধ দিবস উদযাপিত

সোমবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২২

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: আন্তর্জাতিক জেনোসাইড স্মরণ ও প্রতিরোধ দিবসের সপ্তম বার্ষিকী উপলক্ষে নিউইয়র্কে জেনোসাইডে নিহতদের স্মরণ ও জেনোসাইড প্রতিরোধের প্রত্যয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে ‘জেনোসাইড ৭১ ফাউন্ডেশন ইউএএস’ নামের একটি সংগঠন। কর্মসূচির মধ্যে ছিল বাঙালি জেনোসাইড স্বীকৃতির উদ্দেশ্যে ‘বিশেষ কর্মসূচি’ শুরু উপলক্ষে সংবাদ সন্মেলন, বাংলাদেশসহ বিশ্বময় ঘটে যাওয়া সব জেনোসাইডে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জলন, জেনোসাইড উপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন, ‘৭১ জেনোসাইড স্বীকৃতি বিষয়ে সেমিনার ও আলোচনা সভা। 

সংবাদ সন্মেলনসহ সব অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রদীপ রঞ্জন কর। প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কের কনস্যাল জেনারেল মনিরুল ইসলাম। আলোচক ছিলেন সাংবাদিক ফজলুর রহহমান, অধ্যাপিকা হোসনে-আরা, ইঞ্জিনিয়ার মহম্মদ আলী সিদ্দিকী, এডভোকেট মো. বকতিয়ার আলী, রমেশ চন্দ্র নাথ, কামরুল আলম হিরা, বদিউজ্ঞামান পান্না, জালালউদ্দিন জলিল, অধ্যাপিকা মমতাজ শাহনাজ, একে চৌধূরী, খন্দকর জাহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, শুভ রহমান, স্বাধীন বাংলা বেতার শিল্পী রথীন্দ্র নাথ রায়, ডাক্তার মাসুদুল হাসান, কণ্ঠশিল্পী রেজা রহমান ও জলি কর।

অনুষ্ঠানে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতিসংঘ এবং ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর সার্বজনীন মানবাধীকার সনদ গৃহীত হওয়ার পাশাপাশি জাতিসংঘ প্রনয়ন করে জেনোসাইড কনভেনশন। এ কনভেনশন জেনোসাইড সজ্ঞায়িত হয় ও জেনোসাইড শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে স্বীকৃত হয়। জেনোসাইড সজ্ঞায়িত ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে স্বীকৃত হওয়ার ৬৭ বছর পর জাতিসংঘ ২০১৫ সালের ৬৯তম সাধারন অধিবেশনে ৯ ডিসেম্বরকে স্বীকৃতি দেয় আন্তর্জাতিক গণহত্যা স্মরণ ও প্রতিরোধ দিবস হিসেবে। গণহত্যা স্মরণ ও প্রতিরোধে ঘোষিত এ আন্তর্জাতিক দিবসটি এমনই এক দিনে ধার্য্য করা হয়েছে, যে দিনটিতে ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘে গণহত্যা প্রতিরোধ ও শাস্তি সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কনভেনশন গৃহীত হয়েছিল। তাই বিশেষ এ দিনটির এ দ্বৈত তাৎপর্য রয়েছে।’

প্রদীপ রঞ্জন কর বলেন, ‘একাত্তরের নয় মাসে বাংলাদেশে যে নিসংশতা ও বর্বরতা সংগঠিত ঘটেছে, তা যেভাবেই সংজ্ঞায়িত করা হোক, তা ‘জেনোসাইড’ হিসেবেই চিহ্নিত হবে, তা নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী যে জেনোসাইড চালিয়েছিল, তার নির্মম সাক্ষীও অনেক। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে, যার বিষদ বর্ণনা রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মিডিয়া প্রকাশিত এত সব মতামত ও প্রতিবেদনের পরও একাত্তরের এতবড় জেনোসাইড আজো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলে নি! জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য যে শক্তিশালী উদ্যোগ আমাদের নেয়া দরকার ছিল। আমরা তা নিতে পারি নাই। বিশ্ব সম্প্রদায়ও চরম অবহেলা দেখিছে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এ অনীহা ও ব্যর্থতার ফলে বিশ্বে একের পর এক জেনোসাইড অব্যাহত রয়েছে; যার সর্বশেষ সংযোজন মায়ানমারের সামরিক জান্তা কর্তৃক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চলমান নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষণ যা জেনোসাইডের শামিল।’