নিউইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্ত্রীর গায়ে হাত তোলা, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ভাংচুরের অভিযোগে দ্বিতীয় বারের মত জেল হাজতে গেল শাহ সোবহান সোহাগ নামের বাংলাদেশী ইয়োলো ক্যাব চালক। ডিবি লটারির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট আসার পর ২০১৪ সালে স্ত্রীর একই অভিযোগে প্রথম বার হাজতে যেতে হয়েছিল কুমিল্লা জেলার চাঁদপুরের সোবহান সোহাগকে। সোবহান ২০০২ সালে ডিবি লটারির মাধ্যমে আসেন যুক্তরাষ্ট্রে।
শাহ সোবাহান ২০১২ সালে স্ত্রীসহ যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। এর ঠিক দুই বছর পর স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে তাকে জেল হাজতে যেতে হয়। তার ঠিক ১২ বছর পর ফের ঘটল একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। সোবহানের স্ত্রীর অভিযোগ, সম্প্রতি তার স্বামী নোয়াখালীর ফারিন নিখাদ নামের তরুণীর প্রেমে পড়েছেন। সেখান থেকেই শুরু দাম্পত্য কলহ। ওই তরুণীর প্ররোচনায় সোবহান তার বিবাহিত স্ত্রীকে ডিভোর্স দেয়ার হুমকি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেয়ার হুমকি-ধামকিসহ উপর্যপুরি খুনের হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে তার তিন সন্তানের সামনে তাকে মারধর ও বাসায় ভাংচুর করে।
এ ঘটনায় সোবহানের স্ত্রী ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের অভিযোগ করলে সেখান থেকে তারা তার অভিযোগের বিবরণ শুনে পুলিশ পাঠায়। এরপর নিউইয়র্ক পুলিশ সোবহানকে শনিবার দিবাগত রাতে (১৬ জুন) নিজের বাসা থেকে আটক করে হাজতে নিয়ে যায়।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ফারিন নিখাদ ভ্রমণ ভিসায় পরিবারের সঙ্গে নিউইয়র্কে আসেন। পরবর্তী ম্যানহাটনের ২৭ স্ট্রিটে একটি রেষ্টুরেন্টে চাকরি নেন। এরই মধ্যে ইয়োলো ক্যাব চালক সোবহানের সঙ্গে পরিচয় ও এক পর্যায়ে সেই পরিচয় ঘনিষ্ট মেলামেশায় গিয়ে ঠেকে।
সোবহানের স্ত্রী অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালের ঘটনার পর সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসলেও নোয়াখালীর ওই মেয়ের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানের পর থেকে তার স্বামীর আচরণগত পরিবর্তন ঘটে। অযথা রাগারাগি, ঝগড়া-ঝাটি, মেজাজ দেখানো, বাসায় ফেরায় অনিয়ম ও জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে তাকে নোয়াখালীর ওই তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ট মেলামেশা করতে দেখা যায়।
কয়েক বার গাড়ির পেছনের সিটে তাদের অসংলগ্ন অবস্থায় দেখতে পান বলেও অভিযোগ করেন তার স্ত্রী। এরপর সেসবের প্রতিবাদ করলে সর্বশেষ সোবহান স্ত্রীর গায়ে হাত তুলেন।
সোবাহানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া ওই মেয়ের মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে মেয়েকে শাসনের কথা বললে তারাও এতে উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখায় বলে জানায় সোবহানের স্ত্রী।
এ দিকে, ওই তরুণীর সঙ্গে সখ্যতার পর থেকে স্ত্রী ও তিন সন্তানের বাড়ি ভাড়া ও খাবারের খরচের অর্থ দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে সোবাহান।