ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুনের হুমকি দিয়ে ইমেইল দেয়ার অভিযোগে সৌদি আরব থেকে যুবদলের দুইজনকে ফেরত এনেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। এ দুইজনের নাম দীন ইসলাম ও কবির হোসেন।
রোববার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুনের হুমকি দিয়ে ইমেইল দেয়ার অভিযোগে সৌদি আরব সরকার তাদেরকে আটক করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায় ও গেল ২৯ জানুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে।’
মো. আসাদুজ্জামান আরো বলেন, ‘গেল বছরের ১৭ এপ্রিল বিকাল চাটা ৫৯ মিনিটে ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন সেন্টারের ইমেইলে একটি হুমকি বার্তা সম্বলিত ইমেইল আসে।
এতে লেখা ছিল, ‘Prime Minister Sheikh Hasina will be shot at 4 am on April 27. Bangladesh police do not have the power to prevent this attack.’
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোর চারটায় গুলি করা হবে। বাংলাদেশ পুলিশের ক্ষমতা নেই এ হামলা ঠেকানোর। ইমেইলে বডিতে একই হুমকি বার্তা লেখা ছিল।’
তিনি বলেন, ‘তৎক্ষণাৎ হুমকি বার্তার ভয়াবহতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃংঙ্খলার স্বার্থে ব্যাপারটি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি বার্তামূলক ইমেইল প্রেরণকারীকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনকে নির্দেশনা দেয়া হয়। সিটিটিসির একটি চৌকস টিম গোপনীয় অনুসন্ধান ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ শেষে ইমেইল বার্তা প্রেরণকারীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় এবং হুমকি বার্তা প্রেরণকারী ব্যক্তির নাম দীন ইসলাম বাদল বলে নিশ্চিত হয়।’
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘হুমকি বার্তা প্রদানকারীর ইন্টারনেট (আইপি) অ্যাকটিভিটি পর্যালোচনা করে তার অবস্থান সৌদি আরবে শনাক্ত করা হয়। গেল বছরের ২০ এপ্রিল এ ঘটনায় রমনা থানায় মামলা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘মামলার আসামি ও সহযোগীদের সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য পুলিশ সদরদপ্তর ইন্টারপোলের মাধ্যমে এবং একই সাথে ডিপ্লোমেটিক চ্যানেল ব্যবহার করা হয়।
সৌদি কর্তৃপক্ষ তদন্ত শেষে ওই দুজনকে আটক করে এ বছরের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশে পাঠায়। পরে, বিমানবন্দর থেকে সিটিটিসি তাদেরকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে তারা দুইজন রিমান্ডে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দীন ইসলামের কাছ থেকে হুমকি প্রদানকারী ইমেইল অ্যাড্রেসটির রিকভারী মোবাইল নম্বরটিসহ একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।’
আসাদুজ্জামান আরো বলেন, ‘কবির হোসেন সৌদি আরবে এক অংশের যুবদলের সভাপতি আর দীন ইসলাম ওই কমিটির নেতা।
জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, কবিরের পরিকল্পনায় দীন ইসলাম এ মেইল পাঠিয়েছে। কবিরের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে চাঁনপুরের নয়নপুরে আর দীন ইসলামের বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে।’
এক প্রশ্নের উত্তরে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গেল ১৬-১৭ বছর তারা সৌদি আরব থাকছেন। কেউ চাকরি ও ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। বাংলাদেশে আসত না তারা। এ হুমকির সাথে আর কেউ জড়িত আছে, কিনা তা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এ দুইজনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচুর দেশদ্রোহী কন্টেন্ট পাওয়া গেছে।’