রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

শিরোনাম

প্রায় ২৭ হাজার অভিবাসী বিতাড়ন শুরু

শুক্রবার, জুন ১৩, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

 

এই নীতি পরিবর্তন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ভিত্তিতে করা হয়েছে। ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস বা ইউএসসিআইএস ২৬ হাজার সাতশর বেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিতাড়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তাদের অ্যামেরিকায় থাকার জন্য কোনো বৈধ ভিত্তি নেই বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছে।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন নির্দেশনা জারির পর এ উদ্যোগ নেওয়া হলো। এই নীতি পরিবর্তন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ভিত্তিতে করা হয়েছে। একে সীমান্ত নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ আইন প্রয়োগকে অগ্রাধিকার দিয়ে অ্যামেরিকার অভিবাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরানোর উদ্যোগ হিসেবে চিত্রিত করছে ট্রাম্প প্রশাসন।

নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, অভিবাসন সুবিধার আবেদন বাতিল হলে কোনো ব্যক্তি যদি অ্যামেরিকা থেকে বিতাড়নযোগ্য হন, তাহলে সাধারণভাবে তাকে নোটিশ টু এপিয়ার বা এনটিএ দেওয়া হবে। বিষয়টি আসলে অভিবাসন আদালতে হাজিরার নির্দেশ নয়। এটি বিতাড়ন প্রক্রিয়ার সূচনা।

ইউএসসিআইএসের মুখপাত্র ম্যাথিউ ট্র্যাজেসারবলেন, এ আপডেটের ফলে ইউএসসিআইএস আবারওবিতাড়নযোগ্য অভিবাসীদের বিরুদ্ধে এনটিএ ইস্যু করে অভিবাসন আইন প্রয়োগ করতে পারছে।

প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং সেক্রেটারি ক্রিস্টিনোয়েমের নেতৃত্বে সাধারণ বোধসম্পন্ন এনটিএ নীতিতে প্রশাসন ফিরেছে এবং গত ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ হাজারেরও বেশি এনটিএ ইস্যু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অভিবাসন ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে।

ইউএসসিআইএস বর্তমানে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। সংস্থাটি অভ্যন্তরীণ স্ক্রিনিং এবং ভেটিং পদ্ধতি আরও কঠোর করেছে এবং আইসের কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়েছে।

বর্তমানে ইউএসসিআইএস প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১ হাজর ৮৪০টি এনটিএ ইস্যু করছে। বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের সময়ের তুলনায় এখন প্রতি মাসে জালিয়াতি-সম্পর্কিত এনটিএ ইস্যু ২ হাজার ৮১১ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫০০টি অ্যাসাইলাম সংক্রান্ত এবং ১০০টি টেম্পোরারি প্রটেকটেড স্ট্যাটাস-টিপিএস সংক্রান্ত এনটিএ ইস্যু করা হচ্ছে।

আইনি বাধ্যবাধকতা বিদ্যমান থাকার ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী এনটিএ ইস্যুর নিয়ম পরিবর্তন করা হচ্ছে না। এ ছাড়া টিপিএস বা অভিবাসী সুরক্ষা কর্মসূচি ডাকা গ্রহীতাদের ক্ষেত্রেও আগের নিয়মই বহাল রয়েছে।

যদি কোনো দেশের টিপিএস মর্যাদা সেক্রেটারি অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বাতিল করেন এবং সেই দেশের কোনো সাবেক টিপিএসগ্রহীতার অ্যামেরিকায় থাকার অন্য কোনো বৈধ অনুমতি না থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে এনটিএ ইস্যু হতে পারে।

ইউএসসিআইএস এসব ব্যক্তিকে স্বেচ্ছায় অ্যামেরিকা ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছে। একই সঙ্গে চলে যাওয়ার সময় সিবিপি ওয়ান অ্যাপ ব্যবহার করে রিপোর্ট করার আহ্বান জানিয়েছে।

এ নীতির সমালোচকরা বলছেন, এমন কঠোর পদক্ষেপ অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করতে পারে এবং যেসব ব্যক্তির বৈধ মামলা রয়েছে, তারাও সঠিক তথ্য দিতে বা আবেদন করতে ভয় পেতে পারেন।

অভিবাসী অধিকারকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের একতরফা নীতিমালার মধ্যে ব্যক্তিবিশেষের জটিলতা থাকলে, সেটা বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে এ উদ্যোগের সমর্থকদের মতে, এটি একটি সময়োপযোগী ও আইনভিত্তিক পদক্ষেপ।

ট্রাম্প প্রশাসন আরও কিছু অভিবাসন নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে। বিশেষ করে মানবিক ও পরিবারকেন্দ্রিক অভিবাসন এবং সরকারি সুবিধা পাওয়ার প্রশ্নে। এই প্রক্রিয়ায় অভিবাসন আদালতে মামলার সংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।