ঢাকা: প্লাস্টিক বর্জ্য কমাতে সার্কুলার সমাধান চালু করার ওপর জোর দিতে হবে এবং এ সমস্যা সমাধানে সরকারি-বেসরকারি অংশীজনদের যৌথ প্রচেষ্টায় অংশীদারিত্বমূলক উদ্যোগ নেয়া জরুরী বলে জানিয়েছেন বক্তারা। সম্প্রতি ‘সার্কুলার সল্যুশনস ফর প্লাস্টিক ওয়েস্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আয়োজিত ওয়েবিনারে এ ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।
বপ ইনক আরলা ফুডস বাংলাদেশ যৌথভাবে এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে। বপ ইনকের সার্কুলারিটি অ্যান্ড রিজেনারেশন লিড রলফ ড্রস্টের পরিচালনায় ওয়েবিনারে অংশ নেন ইউএসএইড, অক্সফাম বাংলাদেশ, ডেনমার্কের দূতাবাস, আরলা ফুডস বাংলাদেশ, কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজ লিমিটেড, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা (আইএসডি), স্কয়ার গ্রুপ, এসিআই, আরবাব গ্রুপ, প্রাণ আরএফএল গ্রুপ, বাংলাদেশ সাসটেইনেবিলিটি অ্যালায়েন্স এবং নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রতিনিধিরা। ওয়েবিনারে প্লাস্টিক বর্জ্য সমস্যা সমাধানে নানা সুপারিশ করেন আলোচকেরা।
দেশে প্রতিদিন এক হাজার ৭০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা হয় ও বার্ষিক সিঙ্গেল-ইউজ (একবার ব্যবহারযোগ্য) প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ ৮৭ হাজার টন। এই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার পথে বড় বাধা।
ওয়েবিনারে বক্তারা পরিবেশগত অবনতি, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতিসহ অকার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফলে সৃষ্ট নানা সমস্যার ওপর আলোকপাত করেন।
খাত বিশেষজ্ঞরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত শিক্ষার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তরুণ শিক্ষার্থীদের থ্রিআর (রিডিউস, রি ইউস ও রিসাইকেল) এবং পরিবেশের পরিচর্যা সম্পর্কে শেখানো উচিত। ইকোসিস্টেমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমানোর জন্য পাঠ্যক্রমে পরিবেশ শিক্ষা যোগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অংশীজনরা প্লাস্টিক বর্জ্য সমস্যা সমাধানে একটি সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে সম্মত হন। এ জন্য প্রয়োজন প্লাস্টিকের বাস্তবসম্মত বিকল্প, দূষণ ও অপচয় রোধ করা এবং বর্জ্য সংগ্রহ ও পুনর্ব্যবহার জন্য একটি সামগ্রিক পদ্ধতি। এছাড়া, বক্তারা প্লাস্টিক দূষণ কমাতে গ্রামের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। গ্রামের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে বর্জ্য পৃথকীকরণ ও পুনর্ব্যবহারের সুফল সম্পর্কে জানাতে হবে।
বপ ইনকের সার্কুলারিটি অ্যান্ড রিজেনারেশন লিড রলফ ড্রস্ট বলেন, ‘আমরা সবাই বিশ্বব্যাপী পরিবেশ সমস্যা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। এমন সময়ে এই ওয়েবিনার আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। অর্থবহ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা একটি বসবাসযোগ্য ও সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার পথে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য কার্যকরী কৌশল ও সমাধান খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে পারি। আমরা কার্যকর উপায়ে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে আগ্রহী।’
বর্জ্য সমস্যা মোকাবিলায় টেকসই বিকল্প ও সমাধান এবং সার্কুলার অর্থনীতির ওপর জোর দেন বক্তারা। এক্ষেত্রে, উদ্ভাবনী ডিজাইন (পণ্য), শহর ও গ্রামীণ এলাকায় প্লাস্টিক সংগ্রহের জন্য কালেকশন পয়েন্ট ও টেকসই প্যাকেজিং উল্লেখযোগ্য সমাধান হতে পারে।