আবছার উদ্দিন অলি: বছর ঘুরে ফের আসছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর কয়েক দিন পরেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন ঈদুল ফিতর। এ দিনটি নিয়ে আমাদের উৎসাহের শেষ নেই। নিজেকে এ দিনে আকর্ষণীয় করতে সবার প্রচেষ্টা থাকে। নিজেকে আরো সুন্দর আর ফ্যাশনেবেল করতে এ দিনের জন্য আমরা কত কি যে কিনি, তার ইয়ত্তা নেই। সবচেয়ে আগে যে জিনিসটা প্রাধান্য পায়, তা হল জামাকাপড়। ফ্যাশন এমন একটি জিনিস যা সময়ের সাথে বদলায়। এ ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন শপিং কমপ্লেক্সে এরমধ্যেই বহু ভিড় লেগে গেছে। সবাই ঘুরে ঘুরে তার পছন্দের কাপড়টি, জুতা বা অন্যান্য একসেসরিস কিনতে ব্যস্ত। চলুন আজ জেনে নেই, ঈদ উপলক্ষে কি ফ্যাশন চলছে।
নির্দিষ্ট কোন ফ্যাশন আবদ্ধ থাকে না ঈদে। যার যার রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী ড্রেসটি সবাই কিনে থাকেন। ঈদের ফ্যাশন নিয়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করে থাকে দেশীয় বুটিক হাউসগুলো।
শাড়ী: শাড়ীতে বাংলার নারীদের সবচেয়ে বেশি মানায়। ঈদ উপলক্ষে অনেকেই একটু দামী শাড়ী কিনে থাকেন। শাড়ীর মধ্যে তাঁতের শাড়ী, সুতির শাড়ীতে ব্লক বা কাজ, কোটা, শিফন চলছে বর্তমানে। এছাড়া, কাতান, জুট কাতান, সিল্ক, হাফসিল্ক শাড়ীও পছন্দ করছেন ক্রেতারা। টাঙ্গাইল সিল্ক, রাজশাহী সিল্ক, জামদানী বরাবরের মত এবারও চলছে। তবে, সুতির শাড়ীর উপর এমব্রয়ডারি বা পাড় লেস বা চুমকি, পুঁতি, হাতের কাজ করা চলছে হালকা গরমের জন্য। শাড়ী কিনতে দেশী বুটিক হাউসগুলোই বেশি পছন্দের সবার। তারপরও যদি চান অন্যান্য মার্কেট ঘুরেও আসতে পারেন বা নিজেরাই গজ কাপড় যেমন জর্জেটের কাপড় কিনে লেইস লাগিয়ে পছন্দ অনুযায়ী শাড়ী বানাতে পারেন ঈদ উপলক্ষে। ব্লাউজের কাটে এসেছে বৈচিত্র্য।
থ্রি পিস: আমাদের দেশে মেয়েদের পোশাক বলতে মুলত থ্রি পিস কেই বুঝায়। অল্প বয়সী মেয়েরা ছাড়াও এখন একটু বয়স্ক মহিলারাও এটা পড়ে থাকেন। তাই, চট্টগ্রামে বিভিন্ন বুটিক হাউসগুলো তাদের শো রুমে নতুন নতুন ফ্যাশন ও রঙের থ্রি পিস এনেছে। যেমন মিয়া বিবি, চারু চট্টগ্রাম, নগরদোলা, নবরুপা, আড়ং, ক্রে ক্রাফট, শৈল্পিক, সাদাকালো, দেশাল, চৈতি, রাংতা ও দেশী দশের বুটিক হাউসগুলো। যদি একটু আলাদা কাপড় পরতে চান, তাহলে এসব ফ্যাশন হাউজে আসতে পারেন। এছাড়া, আরামদায়ক এবং বিশেষ করে এর রং, ডিজাইনের জন্য লনের থ্রি পিস খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সুতির পাশাপাশি জর্জেট কাপড় চলছে। থ্রি পিসের জামার কাট লং ঝুল কামিজের সাথে এবার শর্ট কামিজও চলছে। ফিটেড বা ঢিলেঢালা দুইটিই চলছে। রঙ্গের ক্ষেত্রে নীল, লাল, কালো, সবুজ, বেগুনি, সাদা ছাড়াও অন্যান্য অনেক রঙ প্রাধান্য পেয়েছে। পায়জামার জন্য চুড়িদার, সোজা কাট সালোয়ার ও লেগিংস এখন মেয়েদের বেশি পছন্দের তালিকায় আছে। থ্রি কোয়াটার, ফুল হাতা বেশি চলছে এখন। অনেকে চাইলে পছন্দমত কাপড় কিনে কামিজ বানাতে পারেন নিজস্ব ডিজাইনে। এতে এমব্রয়ডারি বা হাতের কাজ করে নিতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে, এখনই তা করে নিতে হবে। কেননা এর জন্য বেশ সময় লাগবে। চট্টগ্রামে নারী উদ্যেক্তরাও ঈদ উপলক্ষে অনলাইনে ঈদের জামা কাপড় বিক্রি করছেন। এছাড়াও, বিভিন্ন জায়গায় ঈদ বাজার বসেছে। অনলাইনে ইদানিং প্রতারণা বেড়ে যাওয়াতে ব্যবসায়ে ধস নামলেও যাদের শোরুম আছে, তাদের ব্যবসায় ভাল চলছে।
ফতুয়া ও টপস: বর্তমানে ফতুয়া ও টপস তরুণ মেয়েদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। এটি ফেশনেবল ও আরামদায়ক। একথা মাথায় রেখে দেশী বুটিক হাউসগুলো বেশ কিছু ডিজাইনের ফতুয়া রেখেছে তাদের শোরুমে। এছাড়া, বিভিন্ন মার্কেটেও পছন্দ অনুযায়ী ও ফ্যাশনাবেল ফতুয়া ও টপসটি বেঁছে নিন। সাথে জিনসের প্যান্টটিও কিনতে ভুলবেন না। জিনস আর টপস কেনার জন্য ইয়োলো, একসট্যাসি, বা অন্যান্য নামকরা ব্র্যান্ডের দোকানে ঢু মারতে পারেন।
শুধু নিজে আনন্দ করলেই তো হবে না। অন্যকেও এ আনন্দে শামিল করতে হবে। এতো গেল আপনার শপিং। এখনি বেরিয়ে পড়ুন। কেননা খুঁজতে খুঁজতে বহু সময় লাগে। আর দর্জি ওয়ালারাও পরে সহজে অর্ডার নিতে চায় না। নিজের জন্য কিনুন। পারলে অন্যকে উপহার দিন। ঈদটি যেন সুন্দর হয় আমাদের সকলের জন্য। ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে। নতুন নতুন পোশাকে সাজিয়ে তুলি নিজেকে।
লেখক: সাংবাদিক ও গীতিকার