শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার

শুক্রবার, ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্কট উরবম বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, দুই দেশের এ অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আরো গভীর করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। গেল ৫০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অন্যান্য খাতে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র আগামী ৫০ বছর ও এর পরেও বাংলাদেশের সাথে এ অংশীদারিত্ব আরো দৃঢ় করতে আগ্রহী।’

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ভাষা আন্দোলনের সব শহিদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বাংলাদেশ দূতাবাসে দিনব্যাপী কর্মসূচি নেয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানেস্কট উরবম আরো বলেন, ‘মাতৃভাষা দিবস শুধুমাত্র বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়েই নয়, পুরো পৃথিবীর মানুষের হৃদয়েও বিশেষ স্থান করে নিয়েছে।’

তিনি শ্রদ্ধার সাথে সেইসব বীরদের আত্মত্যাগের কথাও উল্লেখ করেন, যারা বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও বাংলা ভাষা রক্ষায় বহু ত্যাগ স্বীকার করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজ বাংলা পৃথিবীতে অন্যতম সর্বাধিক উচ্চারিত ভাষা হিসেবে স্থান করে নিয়েছে এবং এটি সারা পৃথিবীতে বাংলা ভাষার প্রভাব ও গুরুত্বের প্রমাণ বহন করে।’

রাষ্ট্রদূত ইমরান ভাষা আন্দোলনের সব শহিদ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

তিনি ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে বাঙালি জাতির ‘বাতিঘর’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘ভাষা সৈনিকদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সমৃদ্ধ বাংলা ভাষা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার উপযুক্ত কূটনৈতিক মাধ্যম হতে পারে। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সক্ষমতা নিয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।’

তিনি নতুন প্রজন্মকে সমৃদ্ধ বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে আরো জানার জন্য উৎসাহিত করতে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি অনুরোধ জানান।

পরে, দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে দূতাবাস পরিবার, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ফরেন সার্ভিস ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা এবং ভারত, নেপাল, জাপান ও শ্রীলঙ্কার শিল্পীরা এবং বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক দল কবিতা আবৃত্তি, সঙ্গীত ও দলীয় নৃত্য করে উপস্থিত অতিথিদের মুগ্ধ করেন। পরে, রাষ্ট্রদূত ইমরান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে দূতাবাস আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতার জয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

এর পূর্বে, বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এ গৌরবোজ্জ্বল দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোহাম্মদ ইমরান ও ডিফেন্স অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শাহেদুল ইসলাম অংশ নেন।

রাত ১২ টা এক মিনিটে দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে মোহাম্মদ ইমরানের নেতৃত্বে দূতাবাস প্রাঙ্গণে অবস্থিত শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ‘প্রভাত ফেরি’ বের করার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।

দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল দূতাবাস প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রদূত কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ প্রতিকৃর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ভাষা শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন, তথ্যচিত্র প্রর্দশন ও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি, ফার্স্ট সেক্রেটারি (পাসপোর্ট ও ভিসা উইং) মুহাম্মদ আব্দুল হাই মিলটন এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. আতাউর রহমান।