ঢাকা: বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ১২৬টি দেশের নাগরিকরা ভিসা নিয়ে পাকিস্তানে যাতায়াত করতে পারবে। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সঙ্গে সাক্ষাতকালে তাৎক্ষণিক বৈঠকে এ কথা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার আহমদ মারুফ।
দুই সপ্তাহ পূর্বে পাকিস্তান নয়া ভিসা নীতিমালা ঘোষণা করেছে জানিয়ে আহমদ মারুফ বলেন, ‘তার দেশের নয়া ভিসা নীতির আওতায় বাংলাদেশসহ ১২৬টি দেশের নাগরিকরা ভিসা লাগিয়ে পাকিস্তানে যাতায়াত করতে পারবে।’
বৈঠকে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান এ দুুই দেশের মধ্যে বন্যা পুনর্বাসন, পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন, ভিসা সহজীকরণ, সরাসরি ফ্লাইট চালু, কৃষি গবেষণায় সহযোগিতাসহ উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যাপারে আলোচনা হয়।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সংবাদ জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘বৈঠকের শুরুতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তার দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাতে আসার জন্য স্বাগত জানান। তিনি হাইকমিশনারকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বন্যার ব্যাপারে অবহিত করলে হাইকমিশনার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বন্যা দুর্গতদের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে সহায়তার আশ্বাস দেন।’
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এর প্রভাব পাকিস্তানে পড়েছে উল্লেখ করে আহমদ মারুফ বলেন, ‘সে সময় বহু পাকিস্তানি নাগরিক বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে আনন্দ-উৎসব করেছে।’
এ সময় হাইকমিশনার বর্তমান সরকারের বড় চ্যালেঞ্জের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে রাখাই সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
পাকিস্তানও একই ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে মর্মে দুইজনই একমত প্রকাশ করেন।
পাকিস্তানের হাইকমিশনার গেল ১৫ বছরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে শুষ্কতা পরিলক্ষিত হয়েছে, তার উত্তরণ ঘটিয়ে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানান।
বৈঠকে দুই পক্ষ পারস্পরিক ভিসা সহজীকরণের ব্যাপারে সম্মত হন। এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘দুই সপ্তাহ পূর্বে পাকিস্তান নয়া ভিসা নীতিমালা ঘোষণা করেছে। এর আওতায় বাংলাদেশসহ ১২৬টি দেশের নাগরিকরা ভিসা লাগিয়ে পাকিস্তানে যাতায়াত করতে পারবে।’
হাইকমিশনার পারস্পরিক সম্পর্ক ও ব্যবসায়িক স্বার্থে দুই দেশের মধ্যে পুনরায় সরাসরি ফ্লাইট চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি জানান, সর্বশেষ ২০১৮ সালে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু ছিল; যা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস (পিআইএ) অপারেট করত।
বৈঠকে মানব পাচার প্রতিরোধ, সন্ত্রাস দমন ও কৃষি গবেষণা খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারেও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনের কাউন্সেলর কামরান ধাঙ্গাল ও জাইন আজিজ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।