ঢাকা: বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশী পোশাক রপ্তানির প্রধান গন্তব্য বা বৃহৎ আমদানিকারক দেশগুলোতে উৎসাহব্যঞ্জক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডার পাশাপাশি অপ্রচলিত বাজারগুলোতেও রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে দেখা যায়, চলতি অর্থ বছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে পোশাক রপ্তানি ১৬ দশমিক ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মোট রপ্তানি সাত দশমিক ৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে নয় দশমিক শুন্য সাত বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে সবচেয়ে বড় বাজার জার্মানিতে পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি দুই দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে প্রবৃদ্ধি হয়েছে এক দশমিক ৮৮ শতাংশ। স্পেন ও ফ্রান্সেও রপ্তানি বেড়েছে যথাক্রমে ১৯ দশমিক ১৫ শতাংশ ও ৩৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
ইউরোপিয় ইউনিয়নের অন্যান্য প্রধান দেশ যেমন ইতালি, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ৫০ দশমিক ৯৫ শতাংশ, ৪৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ, ৩৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ ও ২২ দশমিক ৯০ শতাংশ।
বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘করোনা ভাইরাস পরবর্তী পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে আমাদের উদ্যোক্তাদের বাড়তি প্রচেষ্টা ছিল- কিভাবে রপ্তানি আরো বাড়ানো যায়। প্রধান গন্তব্য দেশগুলোর পাশাপাশি অপ্রচলিত বাজারেও রপ্তানি সম্প্রসারণে নেয়া হয় বিশেষ উদ্যোগ। সবকিছু মিলিয়ে আমরা রপ্তানি বাড়াতে সক্ষম হয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’ তবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভাল হলে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।
আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশী পোশাকের সবচেয়ে বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ছিল তিন দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার, যার কারণে বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে চার দশমিক শুন্য সাত শতাংশ। যুক্তরাজ্য ও কানাডায় গত অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ১১ দশমিক ৭১ শতাংশ ও ৩০ দশমিক ২৫ শতাংশ রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
অন্য দিকে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে অনিয়মিত গন্তব্য বা অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি দুই দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে তিন দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অপ্রচলিত বাজার যেমন জাপানে রপ্তানি ৫৯৭ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছে বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৮ দশমিক ১১ শতাংশ। উচ্চ প্রবৃদ্ধির অন্যান্য অপ্রচলিত বাজারগুলো হল মালয়েশিয়া ১০০ দশমিক ২১ শতাংশ, মেক্সিকো ৪৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ, ভারত ৪৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ, ব্রাজিল ৪৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ ও দক্ষিণ কোরিয়া ৩০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।