কক্সবাজার: যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসনবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েসকে কাছে পেয়ে রাখাইন রাজ্যে মায়ানমারের সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, গণহত্যা ও নিপীড়নের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন রোহিঙ্গারা। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে কক্সবাজারের কুতুপালং আশ্রয় শিবিরে যান যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতিনিধি।
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বাস করছেন রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়া নয় লাখ রোহিঙ্গা। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া নয়টার দিকে নয়েসের গাড়িবহর কুতুপালং আশ্রয় শিবিরে পৌঁছায়। প্রথমে তিনি ক্যাম্প-৯ এর সার্ভিস সেন্টার পরিদর্শন করেন। এরপর ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ পরিদর্শন শেষে সেখানে ১০-১৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী নারী-পুরুষের সাথে কথা বলেন।
ওই আশ্রয় শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা কামাল হোসেন বলেন, ‘মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী রোহিঙ্গাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, আশ্রয় শিবিরে থাকার পরিবেশ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন? মায়ানমারে ফিরে যেতে রোহিঙ্গারা রাজি কিনা? মায়ানমারে পরিবেশ কেমন ইত্যাদি।’
জবাবে কয়েকজন রোহিঙ্গা ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, গণহত্যা ও নিপীড়নের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা রাখাইনে ফিরতে রাজি। কিন্তু ফেরার আগে মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে ও যেখান থেকে (রাখাইন রাজ্য) রোহিঙ্গাদের বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে, সেই বসতভিটায় পুনর্বাসন করতে হবে।’ এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন রোহিঙ্গারা।
রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, ‘মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী তাদের বলেছেন, মর্যাদার সাথে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র আগের মত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মানবিক সেবায় রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে দেশটি।’
মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে রয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (ক্যাম্প ইনচার্জ) মো. খালিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘সকাল নয়টা থেকে দুপুর দুপুরটা পর্যন্ত নয়েস আশ্রয় শিবিরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, ত্রাণ ও চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সাথে নানা বিষয়ে কথা বলেন।’