ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্র সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে বৈঠকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা করেছেন। পাশাপাশি এ সফরে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, মহাকাশ গবেষণা, সেমিকন্ডাক্টর ও খনিজ সম্পদ নিয়ে বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা সই হয়েছে। দুই নেতার বৈঠকের পর এক যৌথ ঘোষণায় এসব বিষয় জানানো হয়েছে। জো বাইডেন ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দুই ঘণ্টা একান্ত বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণা প্রকাশ করা হয়। খবর বিবিসির।
বৈঠক শেষে জো বাইডেন ও নরেন্দ্র মোদী যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে জো বাইডেন বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদীর সাথে বৈঠকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ‘ডিএনএ’র’ মধ্যে গণতন্ত্র রয়েছে।’ তিনি ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রশংসা করেছেন।
কিন্তু, নরেন্দ্র মোদির সরকারের আমলে ভিন্ন মতাবলম্বী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর দমন-পীড়নের বিষয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো যেসব অভিযোগ তুলেছে, সেটি নিয়ে বাইডেনকে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, ‘ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রর সম্পর্ক যে জায়গায় অবস্থান করছে, চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিষয়টি সে রকম নয়। এর মৌলিক কারণ হচ্ছে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারষ্পরিক শ্রদ্ধা হচ্ছে দুই দেশই গণতান্ত্রিক।’
রাষ্ট্রীয় ডিনারের অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন, ‘দুটা মহান জাতি, দুট মহান বন্ধু ও দুটা বড় শক্তি, চিয়ার্স।’
উত্তরে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আপনি মৃদুভাষী, কিন্তু সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আপনি বেশ দৃঢ়।’
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদী এ প্রথম বারের মত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। মোদি তার নয় বছরের শাসনামলে কখনোই এ ধরনের সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেননি।
সংবাদ সম্মেলনে একজন ভারতীয় ও একজন মার্কিন সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন। এ দুটো প্রশ্নই আগে থেকে নির্ধারিত ছিল। তিনি অনুবাদকের মাধ্যমে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
যৌথ বিবৃতিতে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও আইনের শাসন-ভিত্তিক নীতির মধ্য দিয়ে আরো শক্তিশালী, বৈচিত্র্যময় মার্কিন-ভারত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়।
ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়- যুদ্ধের কারণে বিশ্ব যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছে, তা থেকে উত্তরণের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
জাতিসংঘের রীতিনীতি, আন্তর্জাতিক আইন ও সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে বর্তমান যে বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, সেটাকে সম্মান জানানোর প্রতি জোর দেয় দুই পক্ষই।
মায়ানমার ও উত্তর কোরিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে জঙ্গি হামলার ক্ষেত্র হিসেবে যেন ব্যবহার না করা হয়, সে বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে।