ক্যালিফোর্নিয়ার, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গেল ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মোট ৪৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬ বার অভিযান গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের। খবর দ্য গার্ডিয়ানের
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের (ইউসিএলএ) ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে আন্দোলনকারী ২০০ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের প্লাইউড, মেটাল ফেন্স, প্ল্যাকার্ড দিয়ে তৈরি করা ব্যারিকেড এবং ক্যাম্পাস চত্বরের অস্থায়ী তাঁবুগুলো তছনছ করে দিয়েছে পুলিশ। এসব তাঁবুতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাতে ঘুমাতেন।
ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে গেল মার্চের শেষ দিক থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরে সেই আন্দোলন দেশটির অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে সেই আন্দোলন চলার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে ১৮ এপ্রিল রাতে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। এ অভিযানে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী ১০০ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতারের পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ ও তাদের তাঁবু-ব্যারিকেডও তছনছ করে দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু, পরের দিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ফের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্রের এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পুলিশ একাধিক বার অভিযান চালিয়েছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ আন্দোলন বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে আন্দোলনের সংগঠকদের (যাদের মধ্যে ইহুধি ধর্মাবলম্বীরাও রয়েছেন) দাবি, তারা কেবল ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আন্দোলনের প্রথম দিকে চুপ থাকলেও পরে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন। বৃহস্পতিবার (২ মে) বার্তায় বাইডেন বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অবশ্যই সমর্থনযোগ্য। তবে, পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়েরর শিক্ষা ও গবেষণা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম যেন বাধাগ্রস্ত না হয়- সেই দিকেও মনোযোগ দেয়া জরুরি।’