ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: চলতি বছরের গেল সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে। সেপ্টেম্বরে দেশটিতে দুই লাখ ৫৪ হাজার নতুন নিয়োগ হয়েছে। পূর্বের মাস আগস্টে নিয়োগ হয়েছিল এক লাখ ৫৯ হাজার। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হওয়ায় সেপ্টেম্বরে টানা দ্বিতীয় মাসের মত বেকারত্ব কমেছে। বেকারত্বের হার গেল আগস্ট মাসে ছিল চার দশমিক দুই শতাংশ, সেপ্টেম্বরে তা চার দশমিক এক শতাংশে নেমে এসেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগ। সংবাদ বিবিসির।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি নেমে এলেও বেকারত্বের হার নিয়ে এক ধরনের আশঙ্কা ছিল। সেপ্টেম্বর মাসের এ পরিসংখ্যানের বদৌলতে সেই শঙ্কাও দূর হয়েছে। বোঝা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বেশ গতিশীল।
গেল সেপ্টেম্বরেই যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার কমিয়েছে। এক ধাপেই ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট কমানো হয় তখন। মূল্যস্ফীতি দুই শতাংশের ঘরে নেমে এসেছিল। শুধু শঙ্কা ছিল কর্মসংস্থান নিয়ে। সেপ্টেম্বরে নীতি সুদ কমবে- এ সংবাদ বাজারে পূর্ব থেকেই ছড়িয়ে যাওয়ায় গেল মাসে কর্মসংস্থানে আরো গতি এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পূর্বাভাস অনুসারে, সেপ্টেম্বর মাসে নতুন নিয়োগ হওয়ার কথা ছিল এক লাখ ৪০ হাজার মানুষের। কিন্তু, বাস্তবে হয়েছে তার চেয়ে প্রায় এক লাখ বেশি। সর্বশেষ তিন মাসে গড়ে কর্মসংস্থান বেড়েছে এক লাখ ৮৬ হাজার; এর পূর্বে আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসের গড় ছিল এক লাখ ৪০ হাজার।
সেপ্টেম্বরের নতুন নিয়োগ নির্দিষ্ট খাতনির্ভর ছিল না, বরং নানা খাতে নিয়োগ বেড়েছে। এ সময় রেস্তোরাঁ ও বারে নিয়োগ হয়েছে ৬৯ হাজার; স্বাস্থ্য পরিষেবা, সরকারি সংস্থা, সামাজিক সহায়তা খাত ও নির্মাণশিল্পে যথাক্রমে ৪৫ হাজার, ৩১ হাজার, ২৭ হাজার ও ২৫ হাজার নতুন কর্মী নিয়োগ হয়েছে। এ ছাড়া পেশাদার ও ব্যবসায়িক পরিষেবা খাতেও নিয়োগ বেড়েছে।
সেপ্টেম্বর মাসে ঘণ্টাপ্রতি গড় বেতন বৃদ্ধির হারও স্থিতিশীল ছিল। আগস্ট মাসের তুলনায় সেপ্টেম্বরে গড় মজুরি বেড়েছে দশমিক চার শতাংশ; এটা পূর্বের মাসের দশমিক পাঁচ শতাংশের তুলনায় সামান্য কম। তবে, গেল বছরের সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ঘণ্টাপ্রতি মজুরি চার শতাংশ বেড়েছে।
এ দিকে, নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পূর্বে অর্থনীতি বেশ স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কর্মসংস্থানের এ পরিসংখ্যান সম্পর্কে বলেছেন, ‘সেপ্টেম্বর মাসের এ পরিসংখ্যানসহ এ শাসনামলে আমরা এক কোটি ৬০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি। বেকারত্বের হার কম; মজুরি বৃদ্ধির হারও মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি।
আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এসব কারণে এগিয়ে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।