ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লাল, সাদা ও নীল ভেঙ্গে ফেলার সময় এসেছে। ৪ জুলাই সম্পর্কে কোনটি সেরা, তা বাছাই করা কঠিন – এটি কি পিকনিকের খাবার, অল-আমেরিকান স্পিরিট, নাকি চকচকে আতশবাজি? আপনার প্রিয় অংশ যাই হোক না কেন, এখানে লেহাই ভ্যালিতে রাতের আকাশে আতশবাজি দেখার জাদু দেখার মত কিছু নেই। যুক্তরাষ্ট্রের জন্মদিন উদযাপনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আয়োজন হল আতশবাজি। সব রাজ্যেই প্রতি বছরের ৪ জুলাই ঘটা করেই এ আয়োজন করা হয়। তবে, যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে জাঁকালো আতশবাজি দেখতে হলে যেতে হবে এ দশ শহরে।
নিউইয়র্ক সিটি: যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বৃহৎ আতশবাজির আয়োজন করে রিটেইল শপ ম্যাসি’স। নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে ইস্ট রিভার প্রণালীতে এ আতশবাজির আয়োজন করা হয়, যা দেখতে প্রতি বছর বছর থার্টি ফোর স্ট্রিট বরাবর এফডিআর ড্রাইভ ও লং আইল্যান্ড সিটির নদীর ধারে ভিড় করে লাখো মানুষ। হাজার হাজার শেল ব্যবহার করে এখানকার ফায়ারওয়ার্ক শোতে ১৭টি স্বতন্ত্র এক্সপ্লোশান প্যাটার্ন তৈরি করা হয়। প্রতি বছরই ৪ জুলাই রাত সাড়ে নয়টার দিকে শুরু হয় ২৫ মিনিটের এ শো।
বোস্টন: ম্যাসাচুসেটসের বোস্টনে ৪ জুলাইয়ের উদযাপনের নাম বোস্টন হারবারফেস্ট। আতশবাজির পাশাপাশি সেখানে রাতে কার শো, লাইভ মিউজিক, সাইট ট্যুরসহ বিভিন্ন আয়োজন হয়। প্রতি বছর হারবারফেস্টে যোগ দিতে প্রায় তিন মিলিয়ন মানুষ জড়ো হন। সেখানে চার্লস রিভার ও এসপ্ল্যানেয়ডের হ্যাচ শেলে ৪ জুলাই সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হয় আতশবাজি।
ওয়াশিংটন ডিসি: অন্যতম দেশাত্ববোধক আতশবাজি হয় ওয়াশিংটন ডিসিতে। সেখানে প্রতি বছর ২৭ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হয়। লিংকন মেমোরিয়াল রিফ্লেক্টিং পুল থেকে আতশবাজি ছোড়া হয়। ক্যাপিটল হিল ও ওয়াশিংটন মনিউমেন্টের পেছনের আকাশ ছেয়ে যায় বর্ণিল আলোকছটায়।
ফিলাডেলফিয়া: যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও স্বাধীনতার ঘোষণার খসড়া হয়েছিল ফিলাডেলফিয়ায়। তাই, এখানকার ৪ জুলাই উদযাপন বেশ ঐতিহ্যঘেঁষা। এখানে রাষ্ট্রের জন্মদিনের রাতে আতশবাজির পাশাপাশি হয় কনসার্ট। আয়োজনের নাম দ্য ওয়াওয়া ওয়েলকাম অ্যামেরিকা। ফিলাডেলফিয়া মিউজিয়াম অফ আর্টে হয় আতশবাজি, যা উপভোগ করা যায় বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন পার্কওয়েতে। সন্ধ্যা থেকে শুরু করে উৎসব চলে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত।
সান ডিয়েগো: প্রতি বছর তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার দর্শনার্থী ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ডিয়েগো কাউন্টিতে জড়ো হন ওয়েস্ট কোস্টের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আতশবাজি দেখতে। এবারো রাত নয়টার দিকে শুরু হওয়ার কথা বিগ বে বুম ফায়ারওয়ার্ক শো। সান ডিয়েগো বেতে হারবার আইল্যান্ড, এমবারক্যাডেরো, শেল্টার আইল্যান্ড ও সিপোর্ট ভিলেজের চারটি বার্জ থেকে আতশবাজি হবে।
হিউস্টন: টেক্সাসের হিউস্টনে সিটিসেন্টারে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ল্যান্ড বেইজড আতশবাজি। প্রায় ৫০ হাজার মানুষ প্রতি বছর সেখানে জড়ো হন। এলেয়ানোর টিনস্লে ও স্যাম হিউস্টন পার্কে রাত সাড়ে নয়টার এ ফায়ার ওয়ার্ক শোয়ের শেষে থাকে কান্ট্রি মিউজিক পারফরমেন্স।
ফোর্ট লাওডেরড্যাল: আতশবাজি দেখেতে শত শত মানুষ সমবেত হন। ফ্লোরিডার ফোর্ট লাওডেরড্যালের ফায়ারওয়ার্ক শোতে দর্শনার্থীদের জন্য থাকে মজাদার খাবার-দাবারে স্টল, বিভিন্ন আনন্দ আয়োজন ও লাইভ মিউজিক। জমজমাট এ ওপেন এয়ার পার্টি উপভোগ করতে রাজ্যের হাজারো মানুষ সেখানে জড়ো হন। বিকাল থেকে পার্টি শুরু হয়, আর সূর্য ডোবার পর শুরু হয় আসল আকর্ষণ আতশবাজি।
অ্যাটলান্টিক সিটি: স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে অংশ নেয় শিশুরাও। ৪ জুলাইয়ে নিউ জার্সির এ শহর মেতে ওঠে উৎসবে। ব্রডওয়াক ও মেরিনে আয়োজিত হয় দৃষ্টিনন্দন আতশবাজির।ট্রপিকানার সামনে স্টিল পিয়েরে আরেক চোখ ধাঁধানো আতশবাজি হয়। সবগুলোই রাতের আয়োজন।
পোর্টল্যান্ড: ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে ওয়াটারফ্রন্ট ব্লুজ ফেস্টিভ্যাল হল ৪ জুলাই উদযাপনের জাঁকালো আয়োজন। দিনভর বিভিন্ন আয়োজন শেষে রাত দশটায় টম ম্যাক্যাল ওয়াটারফ্রন্ট পার্কে শুরু হয় আতশবাজি। উইলামেট রিভারে নৌকা থেকে ছোড়া হয় ফায়ারওয়ার্ক।
সেইন্ট লুইস: মিসৌরির এ শহরের বিখ্যাত গেইটওয়ে আর্ক ঘিরে ৪ জুলাইয়ের আয়োজনকে বলা হয় ‘যুক্তরাষ্ট্রেওর সবচেয়ে বড় বার্থডে পার্টি’। মিসিসিপি নদীর উপরে আকাশ ছেয়ে যায় আতশবাজির বাহারি আলোতে। ৪ জুলাইয়ের সন্ধ্যার এ আয়োজন দেখতে দুপুর থেকেই জায়গা বেছে নিতে নদীর ধারে জড়ো হতে থাকেন দর্শনার্থীরা।