রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

যেসব সুবিধা পাবেন প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টারা

শনিবার, আগস্ট ১০, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর দ্বাদশ সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। ইতিমধ্যে সরকারের দফতরও বণ্টন করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী এ সরকারের প্রধানসহ বাকি উপদেষ্টারা কে কী সুবিধা পাবেন, তা নিয়ে জনমনে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।

বিদ্যমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক কিংবা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের বেতন ও সুযোগ সুবিধার ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা নেই। তবে, প্রধান উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর সমান পদমর্যাদায় দায়িত্ব পালন করবেন। একইভাবে মন্ত্রীর সমান মর্যাদায় দায়িত্ব পালন করবেন উপদেষ্টারা। সেই হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সমমর্যাদার সুযোগ সুবিধা পাবেন প্রধান উপদেষ্টা ও মন্ত্রীদের মত সুবিধা পাবেন উপদেষ্টারা।

সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিরা গাড়ি, বাড়ি, চিকিৎসা খরচসহ অন্তত ১৩ ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। জেনে নেয়া যাক সেসব সুবিধার বিশদ।

প্রধান উপদেষ্টার বেতন ও সুযোগ-সুবিধা: দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স (রেমুনারেশেন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৬ অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেতন মাসে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা। এছাড়া, তিনি মাসিক বাড়ি ভাড়া পান এক লাখ টাকা, দৈনিক ভাতা পান তিন হাজার টাকা। যাতায়াত খরচ, বাড়ির ভাড়া, ডেইলি অ্যালাউন্স, ইনস্যুরেন্স সুবিধা, কূটনৈতিক পাসপোর্ট, নিজের দফতরের ও অন্য টেলিফোন ব্যয়, চিকিৎসা সেবাসহ আরো বহু সুবিধা পেয়ে থাকেন। বর্তমান প্রধান উপদেষ্টাও একই সুবিধা পাবেন ও এসব খরচ পুরোটাই দেবে রাষ্ট্র। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একটি সরকারি বাস ভবন পান। তবে কেউ চাইলে নিজের বাড়িতে অথবা অন্য কোথাও বাড়ি ভাড়া নিয়েও থাকতে পারবেন। সেক্ষেত্রে সেই বাড়িও সরকারি টাকায় অত্যাধুনিক বিলাসবহুল করে সাজিয়ে দেয়া হবে। তার বাড়ির নিরাপত্তায় থাকেন স্পেশাল ফোর্সের সদস্যরা। বর্তমান প্রধান উপদেষ্টাও একই সুবিধা পাবেন।

উপদেষ্টাদের বেতন ও সুযোগ-সুবিধা: একজন পূর্ণ মন্ত্রীর মাসিক বেতন এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা। সে হিসেবে উপদেষ্টারাও একই বেতন পাবেন। দায়িত্বে আসার পর সব মন্ত্রীই সরকারি ব্যয়ে একটি সুসজ্জিত বাসভবন পান বিনা ভাড়ায়। তবে, মন্ত্রী সরকারি বাড়িতে না থেকে যদি নিজ বাড়ি বা ভাড়া বাড়িতে থাকেন, সেক্ষেত্রে আলাদা বাসাভাড়া দেয়া হয়। সরকার থেকে পূর্ণ মন্ত্রীদের বাসাভাড়া হিসেবে দেয়া হয় ৮০ হাজার টাকা। এছাড়া, নিজ বাড়ি বা ভাড়া বাড়িতে থাকলে সেটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও তিন মাসের বাড়িভাড়ার সমান টাকা পাবেন। সরকারি বাড়ি সাজসজ্জার জন্য প্রতি বছর পাঁচ লাখ টাকা পান একজন মন্ত্রী। সে হিসেবে উপদেষ্টারাও একই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। মন্ত্রীদের দফতরে দেশি-বিদেশি অনেকেই আসেন সাক্ষাৎ করতে। তাদের আপ্যায়নের জন্য মাসে দশ হাজার টাকা করে পান মন্ত্রী। এখন উপদেষ্টারাও একই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। মন্ত্রিত্ব থাকা অবস্থায় মন্ত্রিসভার সদস্যরা অসুস্থ হলে তার পুরো ব্যয়ভার সরকার বহন করে। এক্ষেত্রে বলা আছে, ‘চিকিৎসা খরচ সীমাহীন। তবে, ব্যয়ের ভাউচার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দিতে হবে।’ এখন উপদেষ্টারাও একই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। মন্ত্রী সরকারি ব্যয়ে একটি গাড়ি পেয়ে থাকেন। গাড়িটি পরিবহন পুল সরবরাহ করে। জ্বালানি বাবদ দৈনিক ১৮ লিটার জ্বালানি তেলের সমপরিমাণ অর্থ দেয়া হয়। মন্ত্রী দেশের ভেতরে কোথাও ভ্রমণে গেলে দৈনিক ভাতা পান দুই হাজার করে। এখন উপদেষ্টারাও একই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। নিজের পছন্দ অনুযায়ী উপসচিব পদমর্যাদার একজনকে একান্ত সচিব হিসেবে পান মন্ত্রী। পূর্ণ মন্ত্রী একজন সহকারী একান্ত সচিব ও সরকারি কর্মকর্তার বাইরে নিজের পছন্দের একজন সহকারী একান্ত সচিব পেয়ে থাকেন। এছাড়া, দুইজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, একজন জমাদার, একজন আরদালি, দুইজন অফিস সহায়ক ও একজন পাচক পেয়ে থাকেন। এছাড়া, মন্ত্রী একটি করে মোবাইল ফোন পাবেন। এখন উপদেষ্টারাও একই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।