ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চীনের মধ্যস্থতার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলেছে, ‘মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে মধ্যস্থতার ক্ষেত্রে বেইজিংকে ‘নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী’ হিসেবে দেখছে না ওয়াশিংটন।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘যুদ্ধ অবসানে চীনের মধ্যস্থকাকারী হওয়ার প্রস্তাবকে এ প্রথম সরাসরি নাকচ করে দিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরকার।’
গেল বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ যুদ্ধ। ভয়াবহ ও রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধ গত মাসে এক বছর পার করেছে। যুদ্ধের ইতি টানতে সেই শুরু থেকেই কূটনৈতিক দৌড়ঝাপ চলছে। তবে, কোন প্রচেষ্টাই এখন পর্যন্ত সফল হয়নি।
এ ব্যাপারে সম্প্রতি মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেয় চীন। শুধু তাই নয়, যুদ্ধ অবসানে ১২ দফা শান্তি প্রস্তাব দেয় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সরকার। এরপর চলতি সপ্তাহের মস্কো সফরেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে ওই শান্তি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
এ শান্তি প্রস্তাবের মূল কথা ছিল: রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো ও আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুদ্ধের স্থায়ী সমাধান। প্রস্তাবের বিষয়ে পুতিন বলেছেন, ‘চীনের শান্তি পরিকল্পনার অনেক দফাই যুদ্ধ নিষ্পত্তির ভিত্তি হিসেবে নেয়া যেতে পারে। তবে এর জন্য পশ্চিমা বিশ্ব ও কিয়েভকে এগিয়ে আসতে হবে।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও চান, চীন শান্তিপ্রক্রিয়ায় যুক্ত হোক। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) কিয়েভে সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজেই চীনের প্রতি এ আহ্বান জানিয়েছেন।
চীনা প্রেসিডেন্টের এ সফরের পর যুদ্ধ বন্ধে নতুন করে আলোচনা শুরুর একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে, ইউক্রেনের প্রধান সহযোগী যুক্তরাষ্ট্র চীনকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মানতে নারাজ। বুধবার (২২ মার্চ) হোয়াইট হাউজে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরকারের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কারবি।
যুদ্ধ বন্ধে চীনের মধ্যস্থতা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে কারবি বলেন, ‘আমার মনে হয় না, আপনি কোনভাবে চীনকে নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দেখতে পারেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘পুতিন ও জিনপিংয়ের চলতি সপ্তাহে বৈঠক হয়েছে। তবে, এ থেকে শিগগিরই যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোন আশা দেখা যাচ্ছে না।’
তবে, রাশিয়াকে ইউক্রেনের সার্বভৌম অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারসহ যুদ্ধ বন্ধে মস্কোকে চাপ দিতে বেইজিংয়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন পশ্চিমা নেতারা।