ঢাকা: মায়ানমারে মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হয়ে গত ৫ বছর ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। মায়ানমারের জান্তা সরকারের অস্বীকৃতিতে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে নি একজন রোহিঙ্গাও। সময়ের বিবর্তনে বাংলাদেশে এ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা এখন ১২ লাখ।
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গত ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী জুলিয়েটা ভেলস নয়েস। এরইমধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন তিনি। তবে দেশে ফেরার আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের সাথে সাক্ষাত করতে যান নয়েস। এ সময় তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের কথা জানান। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও অন্যান্য দেশে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
সাক্ষাৎ শেষে জুলিয়েটা ভেলস নয়েস সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের সমর্থন ও পুনর্বাসন করতে পারায় যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত। রোহিঙ্গাসহ বিশ্বব্যাপী শরণার্থীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা বাইডেন সরকারের অগ্রাধিকার।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও অন্যান্য দেশে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরিতে কাজ করছে মার্কিন সরকার। একই সাথে বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথেও কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।’
পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রী সংবাদিকদের জানান, ৮ ডিসেম্বর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রথম ব্যাচ যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ছাড়াও শক্তিশালী কয়েকটি দেশের কাছে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের আবেদন জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে যখন আলাপ করেছিলাম এ বিষয়ে, তখন ওনাকে বলেছিলাম কমপক্ষে এক লাখ রোহিঙ্গা নেবেন। আমি সেটা ব্রিটিশ, জাপানিদেরও বলেছি। যার সাথে দেখা হয়, আমি তাকেই বলি।’
তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী জুলিয়েটা ভেলস নয়েস জানিয়েছেন, প্রথমে ৬২ জন যুক্তরাষ্ট্রে যাবে। আগামী ৮ ডিসেম্বর প্রথম দফায় কয়েকজন যাবে। তারা প্রতি বছরই কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা নেবে। কিন্তু কতজনকে নেবে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানি না।’
অপর এক সাক্ষাতে বিকালে জাপানি রাষ্ট্রদূতের কাছেও রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের আবেদন জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রী।