মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান নয়া সেনা প্রধান

মঙ্গলবার, জুন ১১, ২০২৪

প্রিন্ট করুন
য়াকার-উজ-জামান

ঢাকা: চীফ অফ জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে জেনারেল পদবীতে পদোন্নতি প্রদানপূর্বক নতুন সেনাবাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার (১১ জুন) এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আগামী ২৩ জুন অপরাহ্ন থেকে তার এ নিয়োগ কার্যকর হবে। তাকে আগামী তিন বছরের জন্য সেনাবাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

ওয়াকার-উজ-জামান ১৯৮৫ সালের ২০ ডিসেম্বর ১৩তম দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ মিরপুর ও যুক্তরাজ্যের জয়েন্ট সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। এছাড়াও, তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘মাস্টার্স অব ডিফেন্স স্টাডিজ’ ও যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে ‘মাস্টার্স অব আর্টস ইন ডিফেন্স স্টাডিজ’ ডিগ্রি অর্জন করেন।

তার সুদীর্ঘ ৩৯ বছরের বর্ণাঢ্য সামরিক জীবনে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদের পাশাপাশি নবম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ও সাভার এরিয়া কমান্ডার, সেনাসদরে সামরিক সচিব ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চীফ অব জেনারেল স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনে প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১০ সালের ৮ জুন পর্যন্ত ১৭ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-অধিনায়ক ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহ দমনে নিষ্ঠা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে প্রশংসা অর্জন করেন। পরবর্তী, তিনি ২০১১ সালের ২৭ জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত দুই বছরেরও বেশি সময় ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জিওসি হিসেবে ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন বছর নবম পদাতিক ডিভিশন কমান্ড করেন। এরিয়া কমান্ডার, সাভার এরিয়া ও জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) নবম পদাতিক ডিভিশন হিসেবে তিনি টানা তিন বছর অত্যন্ত সফলভাবে বিজয় দিবস প্যারেড ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬’-এর প্যারেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। এ বিরল কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি সেনাগৌরব পদকে (এসজিপি) ভূষিত হন।

স্টাফ হিসেবে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত একটি ব্রিগেড, স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি এন্ড ট্যাকটিকস (এসআইএন্ডটি) এবং সেনাসদরে বিভিন্ন পদবী ও নিয়োগে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, তিনি প্রশিক্ষক হিসেবে জেসিও এনসিও একাডেমি (জেএনএ), স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি এন্ড ট্যাকটিকস ও বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পিস সাপোর্ট এন্ড ট্রেনিংয়ে (বিপসট) অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে সব পদবীর দেশী-বিদেশী সেনাসদস্যদের প্রশিক্ষণ দেন।

সেনাসদর সামরিক সচিবের শাখায় তিনি সহকারী সামরিক সচিব, উপ-সামরিক সচিব ও সামরিক সচিব (এমএস) হিসেবে বিভিন্ন মেয়াদে দীর্ঘ দিন কর্তব্যরত ছিলেন। সেনাসদর, জিএস শাখার চীফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও-এএফডি) হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে কর্মরত ছিলেন।

ওয়াকার-উজ-জামান জাতিসংঘের ব্যানারে মিলিটারি অবজার্ভার হিসেবে এংগোলাতে ও সিনিয়র অপারেশন অফিসার হিসেবে লাইবেরিয়াতে দায়িত্ব পালন করেন। সেনাবাহিনীতে তার কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি অসামান্য সেবা পদকে (ওএসপি) ভূষিত হন। এছাড়া, তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবে দেশে ও বিদেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও কনফারেন্সে অংশ নিয়েছেন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ও সারাহনাজ কমলিকা জামান দুই কন্যা সন্তানের (সামিহা রাইসা জামান ও শাইরা ইবনাত জামান) বাবা-মা। তিনি একজন সজ্জন, ক্রীড়ামোদি ও প্রাণবন্ত অফিসার হিসেবে সব মহলে সুপরিচিত।