ঢাকা: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মুদি দোকানী আবু সায়েদকে খুনের অভিযোগে মামলার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকায় চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিট্রেট আদালতে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এসএম আমীর হামজা নামের ব্যক্তি মামলাটি করেন। একই দিনে শুনানীর পর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে করা মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অপর পাঁচ আসামি হলেন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) প্রাক্তন কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের বৈষম্য বিরোধী (কোটা সংস্কার) আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে গেল ১৯ জুলাই বিকাল চারটার দিকে মোহাম্মদপুর থানাধীন বছিলার ৪০ ফিট চৌরাস্তায় মুদি দোকানী আবু সায়েদ নিহত হন।
গণআন্দোলনের মুখে গেল ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন হিসেবে এটিই প্রথম।
মামলার বাদী আদাবর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী এসএম আমীর হামজা শাতিল। তিনি সচেতন নাগরিক হিসেবে একজন নিরীহ নাগরিক খুনের বিচার চেয়ে এ মামলা করেছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল সমাবেশ করে। ওই সব শান্তিপূর্ণ মিছিলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। এতে বহু ছাত্র-জনতা নিহত ও আহত হন।
গেল ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে বসিলার ৪০ ফিট এলাকায় ছাত্র-জনতা শান্তপূর্ণ মিছিল সমাবেশ করছিল। সেখানেও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। এ সময় রাস্তা পার হতে গিয়ে স্থানীয় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন।’
অভিযোগে আরো বলা হয়, ‘নিহত সায়েদকে তার গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদার নতুন বস্তি প্রধান হাটে নিয়ে গিয়ে দাফন করা হয়। তার মা, স্ত্রী, ছেলে সন্তান সেখানেই থাকেন। এ কারণে তারা ঢাকায় এসে মামলা করতে অপারগ। এ জন্য বিবেকের তাড়নায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি এ মামলা করলেন।’
মামলার অভিযোগে বাদী বলেন, ‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন কঠোর হাতে দমন করার বার বার নির্দেশ দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান কামালের নির্দেশে পুলিশের আইজিপি ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধীনস্থ পুলিশদের মিছিলে গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়। পরস্পর যোগসাজশে আসামিরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। কাজেই এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।’