নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: পুরুষ ও নারী খেলোয়াড়দের সম অধিকারের দাবি দীর্ঘ দিন ধরেই বিভিন্ন দেশে আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। কিন্তু সেই আলোচনা বাস্তবে রূপান্তরিত হবার সম্ভাবনাও দেখা যায় নি। তবে স্রোতের বিপরীতে গিয়ে এবার যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে এক ঐতিহাসিক ঘটনার জন্ম হয়েছে। ইউএস সকার ফেডারেশন দেশটির পুরুষ ও নারী জাতীয় ফুটবল দলের জন্য সমান বেতন দেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছিল, তা মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিক রুপ পেয়েছে।
এর আগে গত মে মাসে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, ২০২৮ সাল পর্যন্ত খেলোয়াড় ইউনিয়নের সাথে চুক্তি অনুযায়ী তারা দুইটি ভিন্ন দলের জন্য একই বেতন কাঠামোতে চুক্তি করবে। নতুন চুক্তি অনুযায়ী পুরুষ ও নারী ফুটবলাররা বিভিন্ন টুর্ণামেন্টে জয়, রাজস্ব শেয়ার ও বিশ্বকাপের প্রাইজ মানি বাবদ সম পরিমাণ অর্থ পাবে।
ওয়াশিংটনের অডি ফিল্ডের নাইজেরিয়ার বিপক্ষে নারী দলের একটি প্রীতি ম্যাচে পর এ চুক্তি সই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ইউএস সকার সভাপতি সিন্ডি পারলো কোন বলেছেন, ‘এ কার্যক্রমের সাথে জড়িত সকলকে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই। বিশেষ করে নারী জাতীয় দল ও তাদের প্লেয়ার্স এসোসিয়েশন এবং পুরুষ জাতীয় দল ও তাদের প্লেয়ার্স এসোসিয়েশন বিশেষ ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। এখানে অনেক মানুষের অবদান রয়েছে। তাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আজ এ দিন সামনে এসেছে। সম অধিকারের বিষয়টি এখন আর শুধুমাত্র আলোচনা মধ্যে সীমিত নয়।’
২০১৯ সালে ফ্রান্সে বিশ্ব কাপে নারী ফুটবল দল শিরোপা জয়ের পর থেকেই মূলত সম অধিকারের বিষয়টি সামনে চলে আসে। বিভিন্ন মহলে এ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। ফেব্রুয়ারিতে ইউএস সকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নারীদের ২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেয়া হবে। কিন্তু পরবর্তী তা বাতিল করে উভয় দলের জন্য একটি নতুন বেতন কাঠামো তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। বিশেষ করে বিশ্ব কাপের মত আসরে প্রাইজ মানির মধ্যে বিশাল পার্থক্যের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ছিল তুঙ্গে। যুক্তরাষ্ট্রের নারী দল এ ক্ষেত্রে শিরোপা জিতে সব সমীকরণ পাল্টে দেয়। পুরুষদের বিশ্ব কাপ পারফরমেন্সের তুলনায় নারীদের এ শিরোপা জয় সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ২০১৯ বিশ্ব কাপ জয়ী নারী দলটি বোনাস হিসেবে এক লাখ দশ হাজার মার্কিন ডলার লাভ করে।
অন্য দিকে, ২০১৮ সালে পুরুষ দল যদি বিশ্ব কাপের শিরোপা জিততে পারত, তবে তারা বোনাস হিসেবে পেত চার লাখ সাত হাজার মার্কিন ডলার।
উভয় দলের প্লেয়ার্স ইউনিয়ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, চলতি বছর পুরুষ ও আগামী বছর নারী বিশ্ব কাপ ছাড়াও ২০২৬ ও ২০২৭ সালের টুর্ণামেন্টগুলোতে ফিফার কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ সমঝোতার ভিত্তিতে উভয় দলের মধ্যে বন্টন করা হবে।