মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান জাতীয় কৌতুক

বৃহস্পতিবার, জুলাই ৪, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান জাতীয় কৌতুক ছাড়া কিছু নয়। দুর্নীতির ‘মহানায়করা’ সরকারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে বড় বড় সরকারি পদে অধিষ্ঠিত থাকল কীভাবে? এ প্রশ্ন এখন সকলের।’

ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সম্প্রতি আলোচিত দুর্নীতির ঘটনাগুলো সম্পর্কে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বর্তমান ডামি সরকার বলছে, দুর্নীতি দমন কমিশ (দুদক) স্বাধীন সংস্থা। কিন্তু, আজকাল সংবাদপত্রের পাতায় দৃষ্টি দিলেই বেনজীর, মতিউর, আছাদুজ্জামান আরো কত নাম দেখা যাচ্ছে। দুদক সত্যিকারের স্বাধীন হলে এসব দুর্নীতির মহানায়করা সরকারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে বড় বড় সরকারি পদে অধিষ্ঠিত থাকলেন কীভাবে? এসব ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে, তথাকথিত স্বাধীন দুদক সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে; কমিশনের শক্ত মেরুদন্ড নেই।’

শিক্ষকদের প্রত্যয় পেনশন স্কিম প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রত্যয় পেনশন স্কিমে শিক্ষকদের যুক্ত করা সরকারের গণবিরোধী নীতি। সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন ‘ন্যায়সঙ্গত’। এ স্কিমের নামে সরকার শিক্ষকদের অনাহারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’

রিজভী বলেন, ‘প্রত্যয় স্কিম করেছেন যে, তাদেরই বেতনের টাকা দিয়ে তারা পেনশনে টাকা রাখবেন আর সরকার অর্ধেক দেবে- এটা তো এক ধরনের তামাশা করা। যারা টাকা পাচার করেছে, ঋণ খেলাপি তাদের টাকা কেড়ে নিচ্ছেন না কেন? তাদের টাকা কেড়ে নিয়ে শিক্ষকদের ফুল পেনশনের ব্যবস্থা করতেন। শিক্ষকদের ফুল পেনশনের ব্যবস্থা করলে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যেত না, তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সর্বক্ষণ পড়াতে পারতেন।’

প্রতিবেশী ভারতের সাথে চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘ভারতের সাথে রেল করিডোর চুক্তি করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অবজ্ঞা করেছে সরকার। ভারতের সাথে করা এসব চুক্তি বাংলাদেশকে চিরদিনের জন্য ক্রীতদাস বানাবে। বাংলাদেশের মানুষ যেমন পিন্ডির বশ্যতা মানেনি, তেমনি কখনোই দিলিস্নর বশ্যতা মানেনি ও ভবিষ্যতেও মানবে না।’

বিরোধী নেতাকর্মীদের নতুন করে ফের গুম করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ব্যর্থ আওয়ামী সরকার পুনরায় গুমের মত নৃশংস পন্থা অবলম্বন করে ফের জনমনে ভীতি তৈরি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। নতুন করে ফের গুম শুরু করেছে।’

রিজভী বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত আড়াইটার সময় ঢাকার শিশু হাসপাতাল থেকে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মারজুক আহমেদ আল-আমিনকে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। গেল ৩০ জুন দুপুর ১২টার সময় সাতক্ষীরা জেলাধীন কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কামরুজ্জামানকে রতনপুরস্থ নিজ বাড়ি থেকে ডিবির এসআই কবির হোসেনের নেতৃত্বে এক দল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তারও কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঘোষিত পুরো দেশের জেলা সদরের সমাবেশে বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানো হয়েছে। নাটোর, পটুয়াখালী, বাগেরহাটে বিএনপির সমাবেশে হামলায় বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’

রিজভী বলেন, ‘কেউ চিরদিন ক্ষমতায় থাকে না। সরকারের পতন অত্যাসন্ন, পতন হবেই। এবার সেই পতন দ্রতই হবে। যেভাবে দেশ বিক্রি চলছে, যেভাবে নিপীড়ন-নির্যাতন চলছে- এবার একটি সার্বিক ও ব্যাপক জনগণের উত্থানের মধ্য দিয়ে এ সরকারের পতন হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সিরাজ উদ্দিন আহমেদ ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল উপস্থিত ছিলেন।