চট্টগ্রাম: সর্বজনীন পেনশন স্কিমে দেশের প্রথম জেলা হিসেবে ৫০ হাজার রেজিস্ট্রেশনের মাইলফলক অতিক্রম করেছে চট্টগ্রাম জেলা। সোমবার (২৭ মে) রাত দশটা পর্যন্ত সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, পুরো দেশে এখন পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করেছে প্রায় দুই লাখ ৫২ হাজার গ্রাহক, যার প্রায় ২০ শতাংশই চট্টগ্রাম জেলা থেকে। এ পর্যন্ত পুরো দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সর্বজনীন পেনশন স্কিমে রেজিস্ট্রেশন করেছেন এ জেলার বাসিন্দারা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সোমবার (২৭ মে) রাত দশটা পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলা থেকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ৫০ হাজার ৬৮৮টি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে রাউজান উপজেলাতে আট হাজার ৬৪৭টি, সীতাকুণ্ড উপজেলাতে পাঁচ হাজার ৬২০টি, বাঁশখালী উপজেলাতে চার হাজার ৬০২টি, কর্ণফুলী উপজেলাতে তিন হাজার ২৩৩টি ও চন্দনাইশ উপজেলাতে তিন হাজার ২১৪টি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে।
সরকারের এ সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় বিভিন্ন পেশাজীবী, প্রবাসী ও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের বৃহত্তম ইস্পাত শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপ তাদের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পেনশন স্কিমে সংযুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। শনিবার (২৫ মে) সীতাকুণ্ডে কেএসআরএম স্টিল প্ল্যান্টে এ নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় উপজেলা প্রশাসন এবং কেএসআরএমের যৌথ উদ্যোগে।
কেএসআরএমের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘সীতাকুণ্ডে কেএসআরএম স্টিল প্ল্যান্টের প্রায় এক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী জাতীয় পেনশন স্কিমের আওতায় এসেছে। অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পর্যায়ক্রমে এ কার্যক্রমের আওতায় আসবে। কোম্পানির করপোরেট সোশাল রেসপন্সিবিলিটির (সিএসআর) অংশ হিসেবে কর্মকর্তা-কর্মকারীদের জাতীয় পেনশন স্কিমের প্রথম কিস্তির টাকা পরিশোধ করবে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ।’
চট্টগ্রাম জেলার প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনবদ্য উদ্যোগ সর্বজনীন পেনশন স্কিম; যা বৃদ্ধ বয়সে সবার অবলম্বন হিসেবে বিবেচিত হবে। চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অন্যতম প্রবাসী অধ্যুষিত জেলা হওয়ায় এখানকার মানুষ এ ধরনের স্কিমে অংশ নিতে ব্যাপক আগ্রহী। জুলাই মাসের মধ্যে এত লাখ রেজিস্ট্রেশনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কাজ করছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ৫০ হাজার ৬৮৮টি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে।’
চলমান কার্যক্রমের ধারা সমান গতিতে বজায় রাখতে তিনি সচেষ্ট জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মত উদ্যোগের সাফল্য সম্ভাবনা বিপুল, ৫০ হাজার মাইলফলক অর্জন সেই পথকে আরো সুগম করেছে। আশা করি, জেলা প্রশাসনের চেষ্টায় ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমরা আরো বহু দূর যাব।’
দেশের জনগণের গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সমাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্ত করার লক্ষ্যে এবং ভবিষ্যতে কর্মক্ষম জনসংখ্যা হ্রাসের কারণে নির্ভশীলতার হার বৃদ্ধি পাবে বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় সংসদ কর্তৃক ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩’ পাশ হয় এবং ২০২৩ সালে ৩১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভের পর আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।