সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে মোদী অনুরোধ করলে তা নাকচ করতে বাইডেনকে চিঠি

সোমবার, জুন ১৯, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: শতাধিক বাংলাদেশী আমেরিকান নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে ভারত যে অনুরোধ করতে পারে, সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করার আহবান জানিয়েছেন।

রোববার (১৮ জুন) হোয়াইট হাউজের যোগাযোগের ঠিকানায় পাঠানো চিঠিতে তারা এ অনুরোধ জানান। পরে, ওই চিঠি তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে জো বাইডেনের বৈঠকে যে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আসবে; সেই খবর ইতিমধ্যে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনের সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। এরই মধ্যে শতাধিক নাগরিক নিজেদের উদ্যোগে বাইডেনকে চিঠি পাঠিয়ে গণতন্ত্রের স্বার্থে ভারতের অনুরোধ না রাখার আহ্বান জানালেন।

ওই চিঠির শিরোনাম ‘মি. প্রেসিডেন্ট; অনুগ্রহ করে বাংলাদেশের স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে সহযোগিতা করতে নরেন্দ্র মোদির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করুন।’

চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে যুক্তরাস্টের ভূমিকার প্রতি বিপুল জন সমর্থন সৃষ্টি হয়েছে। অন্য দিকে, চীন কতৃত্ববাদী সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রবলভাবে এগিয়ে এসেছে। আমেরিকার কঠোর সমালোচনা করে চীন ঘোষণা করেছে যে, তারা স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সাহায্য করতে এখনই প্রস্তুত। এছাড়া, চীন বলছে, ‘‘বাংলাদেশ তার নিজস্ব বাস্তবতায় পথ ঠিক করবে।’’ চীনের এ বক্তব্য ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্বৈরশাসককে ক্ষমতায় রাখার একটি ধূর্ত আবরণ।’

চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘গেল ১৫ বছরে বাংলাদেশে ভারতের বিশেষ প্রভাব ছিল। এ সময়ে চীন প্রভাব বিস্তার করেছে, যা ভারত রোধ করতে পারেনি; যা গণতন্ত্রের জন্য মোটেই ভাল ফল বয়ে আনেনি। পাশাপাশি, ভারত চীনের সাথেই মায়ানমারের সামরিক জনতাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে; যার ফলে নির্মম গণহত্যার শিকার হয়ে প্রায় দশ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।’

চিঠিটি হোয়াইট হাউজে পাঠিয়ে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন সেলিম রেজা, রুহুল আমিন নাসির ও আরো বেশ কয়েকজন। প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে চীন স্বৈরতান্ত্রিক শাসকদের প্রতি অনুরাগী ও প্রভাবশালী আচরণ করছে; যা ওই অঞ্চলে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা হুমকির মুখে ফেলছে।

চিঠির শেষ দিকে প্রেরকরা বলছেন, মি. নরেন্দ্র মোদী যখন ওয়াশিংটন সফর করছেন; তখন ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে শেখ হাসিনার পক্ষে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে সুপারিশ করার ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে। মি. মোদীর এ অনুরোধ বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করবে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন যদি মোদীর এ অনুরোধে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের উপর থেকে সৃষ্ট চাপ থেকে বিরত থাকেন; তাহলে তা পুরো ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মানুষের কাছে একটি ভুল বার্তা দেবে। সেই বার্তাটি হল যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুরক্ষার ব্যাপারে আন্তরিক নয়; আর এ বার্তাটি চীনের অবস্থানকে প্রবলভাবে সমর্থন জানাবে। মি. প্রেসিডেন্ট, এ জন্য আপনার কাছে অনুরোধ, আপনি স্বৈরশাসককে সমর্থনে মি. মোদীর আবেদন প্রত্যাখ্যান করুন।’

এ দিকে, নরেন্দ্র মোদীর আগমনকে ঘিরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ভারতে নিষিদ্ধ হওয়া বিবিসির ডকুমেন্টারি প্রচার করার উদ্যোগ নিয়েছে।