বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

১৯৭১-এ ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের কাছে কিসিঞ্জারের ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল

শুক্রবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের ভূমিকার সমালোচনা করে পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘ডব্লিউআইওএন নিউজ একটি প্রতিবেদন করেছে যে, কিসিঞ্জার যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক নেতৃত্বকে সমর্থন করেছিলেন ও বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাননি।’

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) স্নায়ুযুদ্ধের পররাষ্ট্রনীতির একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব কিসিঞ্জার ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন।

কিসিঞ্জারের সামগ্রিক উত্তরাধিকার সম্পর্কে মোমেন বলেন, ‘হেনরি কিসিঞ্জার একজন আইকনিক কূটনীতিক ছিলেন, তিনি কূটনৈতিক পৃথিবীতে বিশেষ করে বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি প্রণয়নে অপরিসীম ভূমিকা পালন করেছেন।’

তবে, মোমেন ১৯৭১ সালে কিসিঞ্জারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করতে পিছপা হননি ও বলেন, ‘কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১৯৭১ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে থেকেই মারা যান।’

মোমেন পাকিস্তানি সামরিক জান্তাকে সমর্থন করার জন্য ‘সব আমেরিকান আইন এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও পাকিস্তানের অবৈধ দখলদার বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহে তার (কিসিঞ্জারের) ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় কিসিঞ্জার যে নিক্সন প্রশাসনে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, ভারতবিরোধী শক্ত অবস্থান নেয় ও পাকিস্তানকে সমর্থন করে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রী আরো বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানে পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক অভিযানের ফলে দশ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায় এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।’

তিনি বলেন, ‘একজন স্মার্ট মানুষের জন্য এ ধরনের অমানবিক কাজ করা খুবই দুঃখজনক। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানকে সাহায্য করার জন্য বঙ্গোপসাগরে যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস এন্টারপ্রাইজ পাঠিয়েছিল, যদিও এটি পাকিস্তানি সামরিক সংস্থাকে কোন সুবিধা দেয়নি।’

মোমেন কিসিঞ্জারের সমস্যাযুক্ত সিদ্ধান্তগুলো প্রত্যাখ্যান করে দাবি করেছিলেন যে তার ‘পিং পং কূটনীতি’ ও চীন ও পাকিস্তানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পরিবর্তনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় তার অবস্থানকে প্রভাবিত করেছিল।

তিনি আরো বলেন, ‘জেনারেল ইয়াহিয়াকে (খান) সন্তুষ্ট করার জন্য, তিনি এসব দুষ্টু কাজ করেছেন, তাই এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

মোমেন বলেন, ‘আপনি যখন কোন সিদ্ধান্ত নেন, তখন এটি সত্য-ভিত্তিক হওয়া উচিত, আবেগের অধীন নয়। দুর্ভাগ্যবশত, কিসিঞ্জারের মত এত বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন ব্যক্তিরা এটি করতে ব্যর্থ হয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গণহত্যা, গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে তার ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল।’