শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

শিরোনাম

ইসরায়েলকে কী কী সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

সোমবার, এপ্রিল ৮, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েলের চেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা কোন দেশই পায়নি। তবে, গাজায় যে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল, তাতে ইসরায়েলকে বিলিয়ন ডলারের সামরিক তহবিল এবং অন্যান্য সহায়তা দেয়ার ব্যাপারে শর্ত আরোপে বাধ্য হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গাজায় বেসামরিক নাগরিক খুন বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গেল সপ্তাহেই আলটিমেটাম দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘গাজার বেসামরিক নাগরিক ও ত্রাণসহায়তাকর্মীদের হত্যা বন্ধ না হলে হামাসবিরোধী লড়াইয়ে ইসরায়েলকে আর সহায়তা দেবে না তাঁর দেশ। তবে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি অনুসারে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে কী পরিমাণ সহায়তা দেবে তা এক বার দেখে নেওয়া যাক।

২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সরকার তৃতীয় বারের মত দশ বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারক সই করেছে। এ চুক্তির অধীনে ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত- এ দশ বছরে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে মোট তিন হাজার ৮০০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দেবে। এর মধ্যে সামরিক সরঞ্জাম কেনার জন্য ৩৩০০ কোটি ডলার ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য থাকবে ৫০০ কোটি ডলার।

এবার দেখা যাক কী কী উন্নত অস্ত্র পাবে ইসরায়েল। প্রযুক্তিগতভাবে এখন পর্যন্ত তৈরি সবচেয়ে উন্নত ফাইটার জেট হিসেবে ধরা হয় এফ-৩৫ জয়েন্ট স্ট্রাইক ফাইটারকে। এ যুদ্ধবিমান আন্তর্জাতিকভাবে প্রথম ব্যবহার করেছে ইসরায়েল। ৭৫টি এফ-৩৫ জয়েন্ট স্ট্রাইক ফাইটার কিনতে যাচ্ছে ইসরায়েল। গেল বছরও এ ধরনের ৩৬টি যুদ্ধবিমান কিনেছিল তারা। আর যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা থেকেই এসবের দাম পরিশোধ করেছে ইসরায়েল।

২০০৬ সালে ইসরায়েল ও লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধের পর স্বল্প পরিসরের আয়রন ডোম রকেট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিকাশ ও অস্ত্র তৈরিতে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলকে তার ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়তে তুলতেও বেশ কয়েক বার মিলিয়ন ডলার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল থেকে ১২৪ মাইল) দূরে ছোড়া রকেটকে গুলি করার জন্য তৈরি সামরিক ব্যবস্থা হচ্ছে ডেভিড’স স্লিং সিস্টেম। এ ব্যবস্থার উন্নয়নেও অর্থ সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইসরায়েল আরও সামরিক সহায়তা পাবে কিনা তা নিয়েও চলছে আলোচনা। জো বাইডেন গেল বছর কংগ্রেসকে সাড়ে নয় হাজার কোটি ডলারের সম্পূরক ব্যয় বিল অনুমোদন করতে বলেছিলেন। এ বিলের মধ্যে ইসরায়েলের জন্য এক হাজার ৪০০ কোটি, ইউক্রেনের জন্য ৬০০ কোটি ডলার অন্তর্ভুক্ত ছিল।

গেল ফেব্রুয়ারিতে বিলটি সিনেটে ৭০ শতাংশ সমর্থন পেলেও আটকে গেছে নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে। রিপাবলিকান আইন প্রণেতাদের ইউক্রেনে সহায়তা দেয়ায় আপত্তির কারণেই মূলত বিলটি আটকে গেছে।

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩৩ হাজার। এ অবস্থায় মুষ্টিমেয় বামঘেঁষা ডেমোক্র্যাটদের প্রবল আপত্তির মুখে ইসরায়েলে আরো সামরিক সহায়তা দেয়ার বিষয়ে শর্ত আরোপে বাধ্য হয় বাইডেন প্রশাসন।