শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

শিরোনাম

ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ: যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা

শনিবার, মে ৪, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র: ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এ বছর স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। খবর বিবিসির।

ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হওয়া ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ দেশটির ৪৬টি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে চলছে ব্যাপক ধড়পাকড়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন এসব বিক্ষোভ থেকে এরমধ্যে দুই হাজার চার শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে। এ উত্তেজনার মধ্যেই ক্যাম্পাসগুলোতে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের সময় হয়ে এসেছে। এসব আয়োজনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা বাধা দিতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ।

বিক্ষোভ চলছে- এমন চারটি ক্যাম্পাসে চলতি সপ্তাহান্তে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। এছাড়া, নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি ক্যাম্পাসে চলতি মাসে ও জুনে এ আয়োজন হওয়ার কথা রয়েছে। স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করার চেষ্টায় রয়েছে ক্যাম্পাসগুলো। অন্য দিকে, বিক্ষোভকারীরাও এসব আয়োজন বর্জন করা, অনুষ্ঠানস্থল থেকে বেরিয়ে আসা বা ওয়াকআউট করাসহ নানা বিকল্প কর্মসূচি নিয়ে ভাবছেন।

ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি (আইইউ) ক্যাম্পাস থেকে দুই দফায় বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। এখন আইইউ ডাইভেস্ট অ্যান্ড দ্য প্যালেস্টাইন সলিডারিটি কমিটি স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান থেকে ওয়াকআউটের ডাক দিয়েছে।

দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ হয়েছে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান, ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব কানেকটিকাটে। তিনটি ক্যাম্পাসে শনিবার (৪ মে) ও রোববার (৫ মে) স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান হবে।

মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে কোন ব্যানার ও পতাকা বহন করা নিষিদ্ধ থাকবে। সকলকে তল্লাশি করে ঢুকতে দেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ‘অনুষ্ঠানস্থলে স্বেচ্ছাসেবকেরা থাকবেন, পর্যবেক্ষণ করবেন। বাধা দেয়া হলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।’

স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে বাধা দেয়ার পরিকল্পনা আছে কি না, এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি বিক্ষোভকারীদের সংগঠন তাহরির কোয়ালিশন প্রোটেস্ট গ্রুপের আলিফা চৌধুরী। তিনি শুধু বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলোচনার প্রস্তাব পুরোপুরি উপেক্ষা করেছে।’

প্রায় ২০০ মাইল দক্ষিণে, ওয়াইও স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট টেড কার্টার শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতার অধিকার রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে, সতর্ক করে বলেছেন, ‘যে কোন আয়োজন, ক্লাস, পরীক্ষায় বাধা দেয়ার চেষ্টা করা হলে নিয়ম মেনে তা প্রতিহত করা হবে।’

রবিবার (৫ মে) এ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান হবে। এ আয়োজনে বাধা দেয়ার পরিকল্পনা আছে কি না, তা নিশ্চিত করেননি এখানকার ফিলিস্তিনি-আমেরিকান শিক্ষার্থী হেবা লতিফ।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ১৫ মে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। কয়েক সপ্তাহ ধরে এ ক্যাম্পাস চরম উত্তাল ছিল। বিক্ষোভকারীরা একটি ভবন দখলে নেন। পরে পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকে ওই ভবন উদ্ধার করে। ব্যাপক ধড়পাকড় চালায়।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়া হবে।’

এ দিকে, নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের খুন বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রেওর ক্যাম্পাসভিত্তিক ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ পৃথিবীর আরো যেসব শহরে ছড়িয়ে পড়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রিটেনের লন্ডন, ফ্রান্সের প্যারিস ও ইতালির রোম থেকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, জাপানের টোকিও এবং লেবাননের বৈরুত।