শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

শিরোনাম

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের জন্য নিউ ইয়র্কে সুধী সমাবেশ

বুধবার, এপ্রিল ৩, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

নিউ ইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র: জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সাংসদ ফরিদা ইয়াসমিনকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিতে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাতে সোমবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

ফুলের শুভেচ্ছায় সিক্ত ফরিদা ইয়াসমিন এ সময় প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘আমি যখনই নিউ ইয়র্ক সিটিতে আসি, তখনই আপনাদের উষ্ণ আতিথেয়তায় আপ্লুত হয়। এবার নয়া পরিচয়ে এসেও একইভাবে আপনাদের আন্তরিক আতিথেয়তায় আমি অভিভূত ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি শত ব্যস্ততার মাঝেও এ আয়োজনে অংশগ্রহণের জন্যে।’

ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের আরো বহু অনুষ্ঠানে আমি এসেছি। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে, সভাপতি হওয়ার পর-যখনই নিউ ইয়র্ক সিটিতে এসেছি, আপনাদের সঙ্গে মিলিত হয়েছি। সমাবেশে কথা বলেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যেখানেই থাকি না কেন, আমাদের শেকড় কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের আদর্শ বঙ্গবন্ধু, আমাদের আদর্শ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। যে চেতনায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, একাত্তরের ৭ মার্চের যাদুকরি বক্তব্যে পুরো বাংলার সাধারণ মানুষেরাও মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। আর এটিই হচ্ছে আমাদের মূল শেকড়। আর আপনারা যারা এ প্রবাসে আছেন, তাদের প্রত্যেকের হৃদয়েই কিন্তু এক খণ্ড বাংলাদেশ বাস করছে। সে তাগিদেই বহু কিছু ত্যাগ করে আপনারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন ও ধারণ করছেন, এ চেতনাকে এগিয়ে নিতে নিরলসভাবে কাজ করছেন, এটি আসলেই বহু বড় ব্যাপার। দেশকে ভাল না বাসলে এটা সম্ভব হত না।’

ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনার পথে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তার মূলে রয়েছে তিনি সবার কথা ভাবেন। সব সেক্টরের প্রতি তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ রয়েছে। যারা সত্যিকার অর্থে দেশেল জন্যে নিবেদিত, তাদেরকে তিনি কাজে লাগাচ্ছেন চলমান উন্নয়ন অভিযাত্রা ত্বরান্বিত করতে। আমি মনে করি, আমাকে তিনি সাংসদ মনোনীত করে সাংবাদিকদেরকেই সম্মানীত করেছেন, সাংবাদিক সমাজকে মূল্যায়ন করেছেন, বিশেষ এক মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। এ জন্যে দেশ ও প্রবাসের সব গণমাধ্যম কর্মীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি কন্সাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা বলেন, ‘গণমাধ্যম কর্মীদেরকে আমার সহকর্মী হিসেবে স্ট্যাকহোল্ডার হিসেবে পাশে রাখতে চাই। আমরা যারা মানুষের সেবার দায়িত্বে আছি, তাদের সঙ্গে গণমাধ্যমের একটি সুন্দর সম্পর্ক থাকা খুবই জরুরি। কারণ, আমরা যে কাজগুলো করছি, তা গণমানুষের কাছে পৌঁছানো অথবা আমরা যদি কোন ভুল করে থাকি, সেগুলোর শোধরানোর অভিপ্রায়ে পয়েন্টআউট করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সে দৃষ্টিকোণ থেকেই আমরা কাজ করছি।’

নাজমুল হুদা ফরিদা ইয়াসমিনকে নিউ ইয়র্ক কন্স্যুলেট পরিভ্রমণের অনুরোধ জানান।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের হ্যাড অব চ্যান্সেরি শুয়েব আব্দুল্লাহ ফরিদা ইয়াসমিনকে নিউ ইয়র্ক সিটিতে অভিবাদন জানিয়ে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ এর কর্মকান্ডে নিউ ইয়র্ক সিটির অনেকে সময় দিচ্ছেন এবং সাংসদও উৎসাহিত করছেন। পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে এসেছেন বলে সাংসদকেও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

শুয়েব আব্দুল্লাহ বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, এসব সংগঠন টিকে থাকলেই বিদেশের মাটিতে আমাদের চেতনা, আমাদের ঐতিহ্য অটুট থাকবে।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিবেদিত কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মো. ফজলুল হক ফরিদা ইয়াসমিনকে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আপনার বিচক্ষণতাপূর্ণ কর্মকান্ডে বাংলাদেশ তার অভীষ্ঠ লক্ষ্যে উপনীত হবে।’

এ সময় তিনি ঢাকা এয়ারপোর্টে প্রবাসীদের হয়রানি চিরতরে অবসানে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান ফরিদা ইয়াসমিনের প্রতি।

জ্যাকসন হাইটসে মুনলাইট গ্রীল রেস্টুরেন্টের মিলনায়তনে এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া।

তিনি ফরিদা ইয়াসমিনের মত সাদামনের মানুষকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য এবং তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনীত করার জন্যে শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, ‘ফরিদা ইয়াসমিনরা জীবনের পুরোটা সময় ব্যয় করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত থেকে। বাকিটা জীবন গুরুত্বপূর্ণ এ দায়িত্বে শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ রচনায়ও অপরিসীম ভূমিকা পালন করবেন বলে আশা করছি।’

‘প্রিয় মানুষ ফরিদা ইয়াসমিন এমপিকে নিউইয়র্কে অভিনন্দন-শুভেচ্ছা’ ব্যানারে এ সমাবেশের সঞ্চালনায় ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কমিউনিকেশন্স ডাইরেক্টর বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার। সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ এর নারী বিষয়ক সম্পাদক ও বহ্নিশিখা সঙ্গীত নিকেতনের প্রধান সবিতা দাস, নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সুব্রত তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার চুন্নু, ব্রুকলীন কম্যুনিটি বোর্ড-১২ এন নতুন নির্বাচিত সেক্রেটারি মামুনুনুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিব রহমান।

বলে রাখা ভাল, গেল ৩১ মার্চ ভোরে রোম থেকে নিউ ইয়র্ক সিটিতে এসেছেন ফরিদা ইয়াসমিন। ব্যক্তিগত সফরে তিনি ৬ এপ্রিল পর্যন্ত থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রে। শুরুতে ফরিদা ইয়াসমিনকে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান নেতৃবৃন্দ। এ সময় বিশ্ববাংলা টোয়েন্টিফোর টিভির পক্ষ থেকেও চেয়ারম্যান আলিম খান আকাশ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুন্নাহার নিশাও ফরিদা ইয়াসমিনকে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা জানান। আলোচনার পর ইফতারের প্রাক্কালে ইমাম কাজী কায়্যুমের নেতৃত্বে দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়।