শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

শিরোনাম

বিএনপি যে সন্ত্রাসী সংগঠন তা ফের আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত

মঙ্গলবার, আগস্ট ১, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

রংপুর: তথ্য মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি যে সন্ত্রাসী সংগঠন, তা ফের আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত হল।’ মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে রংপুরে বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্র প্রকল্পস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করেন তিনি। এ সময় সাংবাদিকরা ‘কানাডার আদালত পঞ্চম বারের মত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করল’ এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

সম্প্রচার মন্ত্রী আরো বলেন, ‘ইতিপূর্বে বিএনপির কয়েকজন সদস্য যখন কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করে, তখন কানাডার আদালত তাদের রায়ে বলেছিল- বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন ও তারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাচ্ছে এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত, তারা যানবাহন পোড়াচ্ছে, মানুষ পোড়াচ্ছে। এরপর ফের কয়েক দিন আগে বিএনপির আরেকজন সদস্য সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছে এবং সে ক্ষেত্রে কানাডার ফেডারেল আদালত ফের একই রায় দিয়েছে যে, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। সুতরাং, তাদেরকে আর রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া যাবে না এবং এই মর্মে তার আবেদন তারা খারিজ করে দিয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির লজ্জা থাকা উচিত যে, কানাডার আদালত পঞ্চম বারের মত তাদেরকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিল এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও এভাবে যখন বিএনপির সদস্যরা আবেদন করেছে, অনেক জায়গাতেই প্রায় অনুরূপ মন্তব্য করেছে যে, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।’

সাংবাদিকরা বিএনপির নেতা আমান উল্লাহ আমান ও গয়েশ্বর রায়কে সরকারের পক্ষ থেকে উন্নত খাবার ও সেবাদান নিয়ে বিএনপির বিরূপ মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি আওয়ামী লীগের শিষ্টাচার ও ১৫ বছর তাদের আদর করা হয়নি, সেটি সঠিক নয়। যখনই তারা গ্রেফতার হয়েছে, তাদেরকে ডিভিশন দেয়া হয়েছে ও কারাগারের মধ্যে যতটুকু সম্ভব ভাল রাখা যায়, সে চেষ্টা সব সময় করা হয়েছে। আমরা ও আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে অনেক নেতা যখন গ্রেফতার হয়েছে, তাদের খোঁজ-খবর নিয়েছি, যাতে কোন অসুবিধা না হয়।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি আমাদের দলের শিষ্টাচার; যা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা শিখিয়েছেন। এই শিষ্টাচার বিএনপির মধ্যে নাই, এর মর্মও তারা বোঝে না।’

সেইসাথে তিনি বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ বেগম মতিয়া চৌধুরীকে রাসেল স্কোয়ারে টানা-হেঁচড়া করেছে, আমাদের জ্যেষ্ঠ নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে পুলিশ লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। তাদের সেবা-শুশ্রুষা তো দূরের কথা, কোন কিছুই করা হয়নি। বিপরীতে শেখ হাসিনা যেটি করেছেন, এটি রাজনৈতিক শিষ্টাচার। এটির প্রশংসা আমানউল্লাহ আমান নিজেও করেছেন আবার, বের হওয়ার পর ভোল পাল্টেছেন।’

বুধবার (২ আগস্ট) রংপুরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা বিষয়ে তথ্য মন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের মধ্যে যে ব্যাপক সাড়া, উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখতে পাচ্ছি, এতে এটিই প্রমাণিত হয় যে, রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে বুধবার (২ আগস্ট) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির জনসভা প্রকৃতপক্ষে জনসমুদ্রে রূপান্তরিত হবে। যদিও আমরা মাঠে জনসভার স্থান দিয়েছি, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পুরো রংপুর শহরই জনসভার স্থলে রূপান্তরিত হবে।’

ঢাকায় বিএনপির সোমবারের (৩১ জুলাই) সমাবেশ প্রসঙ্গে হাছান বলেন, ‘তারা নিজেরাই তো ‘বোল্ড-আউট’ হয়েছে। বিএনপি ঢাকা অবরোধ করতে চেয়েছিল, সেখান থেকে পালিয়েছে। সোমবার (৩১ জুলাই) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের জনসভা দেখে আমার নিজেরই লজ্জা লাগল যে, ফাঁকা মাঠ, বিএনপির জনসভায় মানুষ এত কম কেন! আপনারা নিশ্চয়ই টেলিভিশনে ফুটেজগুলো দেখেছেন, কত মানুষ হয়েছে আমি জানি না। তবে, বড়জোর ১০-১৫ হাজারের চেয়ে বেশি মানুষ সেখানে হয় নাই।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি এত বড় সমাবেশের ডাক দিল, সেখানে কোন মানুষ নাই। নয়াপল্টনের সামনে ৩০ হাজার মানুষ ধরে রাস্তায়, সে কারণে তারা নয়াপল্টনে করতে চায়। বড় মাঠে গেলে তো বোঝা যায় কত মানুষ যোগ দিয়েছে, সে জন্য মাঠে যেতে চায় না। কালকে মাঠে যাওয়ার পর বোঝা গেছে, আসলে তাদের কর্মীরাই সেখানে নাই।’

এর আগে বিটিভি রংপুর কেন্দ্র প্রকল্প নিয়ে সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার প্রত্যেকটি বিভাগে টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সে জন্য একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে, একনেকে অনুমোদন হয়েছে। রংপুর বিভাগেও বাংলাদেশ টেলিভিশনের একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপনের কাজে হাত দেয়া হয়েছে। সেটি হলে এখানকার শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী সবাই সংস্কৃতির নানা বিষয়ে তাদের দক্ষতা বাংলাদেশময় তুলে ধরার সুযোগ পাবে ও স্থানীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতিকেও তুলে ধরার সুযোগ পাবে।’

মন্ত্রী এ দিন বিটিভি রংপুর প্রকল্প প্রাঙ্গণে গাছের চারা রোপণ করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাব্যবস্থাপক মাহফুজা আক্তার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।