রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

শিরোনাম

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির সমস্যাগুলো দেখার কেউ নেই!

রবিবার, আগস্ট ২০, ২০২৩

প্রিন্ট করুন
আছাদ বিন রহমান ইকফাত

আছাদ বিন রহমান ইকফাত: চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি নামটি শুনলেই যে দৃশ্যটি চোখে ভেসে উঠে, তা হল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আড্ডা দিচ্ছে, তাদের আড্ডার বিষয় নাটক, সাহিত্য, সংগীত ইত্যাদি। আরো ভেসে উঠে উৎসবমুখর পরিবেশ, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসব, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। কবি, সংগীত শিল্পী, নাট্যকার, অভিনেতাসহ সব ধরনের মানুষের আড্ডা ও মিলনকেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি থাকে মানুষে পরিপূর্ণ। কাজের চাপ শেষে ছুটির দিনে মানুষ আসে নাটক দেখতে, আবৃত্তি শুনতে, বিভিন্ন আয়োজন দেখতে। চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়াম বা মিলনায়তন থাকে কানায় কানায় পরিপূর্ণ, প্রযোজনাগুলোর প্রদর্শনী থাকে হাউজফুল।

অডিটোরিয়াম বা মিলনায়তন শব্দটি যখন এসে যায়, ঠিক তখনি একটু থমকে দাড়াতে হয়! আমাদের পুরো চট্টগ্রাম সিটিতে বর্তমানে দুইটি বড় মিলনায়তন রয়েছে। একটি হল চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তন ও অপরটি হল থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি)। চট্টগ্রাম গ্রুপ থিয়েটার ফোরামের অন্তর্ভূক্ত দলগুলোর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রযোজনা থাকে ও তা প্রদর্শিত হয় বেশীর ভাগ সময়ে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে। চট্টগ্রাম গ্রুপ থিয়েটার ফোরামের অন্তর্ভূক্ত দলগুলো ছাড়া বিভিন্ন দলও তাদের প্রযোজনা প্রদর্শনী করে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামের মঞ্চে।

সপ্তাহ ঘিরে যখন কোন প্রযোজনা উপভোগ করার জন্য মানুষ চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামে আসে, তখনি একটু নড়ে বসতে হয়। কারণ, এই অডিটোরিয়ামে নাটক বা কোন প্রযোজনা চলাকালীন বিভিন্ন সমস্যা দর্শক ও পারফর্মারদের মনযোগে ব্যাঘাত ঘটায়। চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামটি ভেঙ্গে নতুন করে নান্দনিকভাবে তৈরি করা হয়েছিল; যাতে আরো দর্শকদের আসন সংকুলান হয় ও বিভিন্ন প্রযোজনাগুলোর যাতে আরো বেশী বেশী প্রদর্শনী করা যায়।

বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রযোজনা দেখা হয়েছে, এই মিলনায়তনের মঞ্চে অভিনয়ও করা হয়েছে, তাছাড়া, লাইটরুম মানে কনট্রোল রুম থেকে আবহ সংগীত প্রক্ষেপণেরও অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই কাজগুলো করতে গিয়ে যে সমস্যাগুলো বিদ্যমান, তার মধ্যে প্রধান একটি সমস্যা হল অডিটোরিয়ামে নাটক চলাকালীন সাউন্ডবক্স বা স্পীকারে বাংলা চলচ্চিত্রের গান চলা। এই বিষয়টা সত্যিই খুবই সমস্যা। অনেকগুলো প্রযোজনা উপভোগ করার সময় ও মঞ্চে অভিনয় করার সময় বাংলা চলচ্চিত্রের গান কানে আসে। এতে করে দর্শক ও অভিনেতা/অভিনেত্রীদের মনযোগ ক্ষুন্ন হয়। যতটুকু জেনেছি, এই গান শোনা যায় রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির কারণে। যেহেতু সমস্যা তৈরি হয়েছে, তাহলে এর সমাধানও আছে। কিন্তু, এই দিকে কর্ণপাত করার মত কেউ নেই। এই সমস্যা অনেক দিন ধরে কিন্তু দেখার কেউ নেই। ফলে প্রতি শোতে নাটক দেখার সময় বাংলা চলচ্চিত্রের গানও উপভোগ করতে হচ্ছে।

দ্বিতীয়ত আরেকটি সমস্যা তা হল- সাউন্ডপ্রুফ নিয়ে। এটি যখন নতুন করে তৈরি করা হয়, এটি সাউন্ড প্রুফ করা হয়েছে কিনা এ নিয়ে সন্দিহান! প্রযোজনা চলাকালীন পেছনের দর্শক সারি হতে বাইরের বিভিন্ন যানবাহনের শব্দ, হর্ণের শব্দ ও অ্যাম্বুলেন্সের শব্দও শোনা যায়। আবার কন্ট্রোল রুম ও দর্শকাসনে কোন প্রযোজনা উপভোগের সময় এসি চলাকালীনও অনেক মশার উপদ্রব থাকে। বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ মহামারী আকার ধারণ করেছে, এটি খুবই ভয়াবহ একটি বিষয়। কন্ট্রোল রুমে মশার উপদ্রব বেশী, দর্শকাসনেও একই অবস্থা।

তাছাড়া, পুরো চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমিজুড়ে কোথাও সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেই। এই সমস্যাগুলো অনেক দিন ধরেই বিদ্যমান। কিন্তু, দেখার কেউ নেই। শিল্প চর্চার জন্য এই বিষয়গুলো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এই সমস্যাগুলো সমাধানে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিপাত করা উচিত।