রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

শিরোনাম

বঙ্গবন্ধু নামে সে ধ্রুবতারা

মঙ্গলবার, আগস্ট ১৫, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

আবছার উদ্দিন অলি: আজ ১৫ আগস্ট সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, ইতিহাসের মহানায়ক স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম মৃত্যু বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। শোকের মাসে রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকান্ডের কালিমালিপ্ত বেদনাবিধুর একটি শোকের দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে মানবতার শত্রু প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকচক্রের হাতে বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলনের মহানায়ক, বিশ্বের লাঞ্চিত-বঞ্চিত নিপীড়িত মানুষের মহান নেতা, বাংলা ও বাঙালির হাজার বছরের আরাধ্য পুরুষ, বাঙালির নিরন্তন প্রেরণার চিরন্তন উৎস শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।

সে দিন ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম এই হত্যাকান্ডে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী ফজিলাতুন্নেছা, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল, নবপরিণীতা পুত্রবধু সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন শেখ ফজলুল হক মনি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত আব্দুল্লাহ্ বাবু, ভাইয়ের ছেলে সেরনিয়াবাত, আব্দুল নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্দু প্রধান নিরাপত্তা অফিসার কর্ণেল জামিল উদ্দিন আহমেদ ও কর্তব্যরত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিহত হন।

১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট নরপিচাশ রুপি খুনিরা শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্ককের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়।

বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই।’ শেখ হাসিনা সব ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েও ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করেন।

শেখ মুজিবুর রহমান চিরঞ্জীব, তার চেতনা অবিনশ্বর। বাঙালি জাতির অস্তিমজ্জায় মিশে আছেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। মুজিব আদর্শে শানিত বাংলার আকাশ বাতাস জল সমতল। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশী চেতনা ও আদর্শ চির প্রবাহমান থাকবে।

আগস্টে পুরো জাতির সঙ্গে একান্ত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী এবং বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদা, শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও ভাবগম্ভীর আর বেদনাবিধুর পরিবেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবস পালন করছে।

আজ ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম মৃত্যু বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদার সাথে পালন করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। প্রতি বারের ন্যায় এবারো শোকার্ত বাঙালি জাতির সাথে একাত্ম হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি নিয়েছে। মাসব্যাপী শোক দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতার প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা। জাতির পিতা চেয়েছিলেন ক্ষুদা ও দারিদ্রমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার কন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ক্ষুদা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বিশ্বসভায় একটি উন্নয়নশীল, মর্যাদাবান জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। পুরো বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে শেখ মুজিবুর রহমানের জাতীয় শোক দিবস পালন করছে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

লেখক: সাংবাদিক, গীতিকার, চট্টগ্রাম