সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

শিরোনাম

ভারতের নয়া নাগরিকত্ব আইন আভ্যন্তরীণ বিষয়, প্রতিবেশি দেশ হিসেবে নজর রাখছি

শনিবার, মার্চ ১৬, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ভারতের নয়া নাগরিকত্ব আইন সিএএ এটি তাদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার, যেহেতু বাংলাদেশ একটি প্রতিবেশি দেশ, সেই হিসেবে আমরা ব্যাপারটির দিকে নজর রাখছি।’

শনিবার (১৬মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম সিটির দেওয়ানজি পুকুর লেনস্থ ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ভারতের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, এ ব্যাপারে বাংলাদেশের অবস্থান কি? এবং যুক্তরাষ্ট্র গতকাল ফের বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু, সুন্দর ও অবাধ হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্নমত থাকতেই পারে। যে কোন দেশের ভিন্নমতকে আমরা সম্মান করি। তবে, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশিরভাগ রাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে ভবিষ্যতে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। পৃথিবীর প্রায় ৮০টি দেশের সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সম্পর্ক দ্বিতীয় পর্যায়ে উন্নিত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। সুতরাং, আমাদের বিবেচনায় আমাদের এ অঞ্চলের নিরিখে অত্যন্ত সুন্দর, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তাদের মতামত দিতেই পারে। তারা প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, বিরোধী দল অংশগ্রহণ করেনি। বাংলাদেশে ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৯টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এবং কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ করা না করা, সেটি সরকারের উপর বর্তায় না, সেটি সেই দলের দায়িত্ব। সেই দল বরং নির্বাচন প্রতিহত করার ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করার লক্ষ্যে দেশে সহিংসতা ঘটিয়েছিল। এবং সেই সহিংসতার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিল, তাদেরকেই শুধু গ্রেফতার করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যেটি বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব এবং সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তারা কাজ করছে, আমরাও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, সম্পর্ককে আরো ঘনিষ্টতর করার জন্য এবং আমাদের যে বহুমাত্রিক সম্পর্ক, সেটিকে আরো বিস্তৃত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একসঙ্গে কাজ করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। তবে, আমাদের দেশে অত্যন্ত সুষ্ঠু, সুন্দর, অবাধ ও উৎসবমূখর পরিবেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।’

সোমালিয়ায় জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও ২৩ নাবিককে মুক্ত করে আনার উদ্যোগ ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের টেলিভিশনে কি দেখাচ্ছে, কি হচ্ছে সেটা কিন্তু যারা হাইজ্যাক করেছে তারা দেখে, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশের সব টেলিভিশন দেখার সুযোগ আছে। যখন এ ব্যাপারটাকে অতিগুরুত্ব দেয়া হয়, জিম্মিদের পরিবারের প্রতিক্রিয়া যখন ওরা দেখে, তখন হাইজ্যাককারীদের অবস্থান আরো অনমনীয় হয় ও হচ্ছে। এ নেগেটিভ ইম্পেক্টটা হচ্ছে।’

ব্যাপারটিকে সকলেই সতর্কভাবে দেখা দরকার উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য তো নাবিকদের ও জাহাজটাকে মুক্ত করা। সুতরাং, আমরা সকলে নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্বশীলভাবে যদি আচরণ করি- তাহলে এ পরিস্থিতি উত্তরণ সহজ হবে। এটি নিয়ে সরকার কাজ করছে, অতীতেও সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠার মাধ্যমে ১০০ দিনের মাথায় একই কোম্পানির জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করা সম্ভবপর হয়েছিল। এখনো আমরা আশা করছি, আমাদের যে সমন্বিত প্রচেষ্ঠা আছে, সুস্থভাবে নাবিকদেরকে ও জাহাজটাকে মুক্ত করে নিয়ে আসতে পারব।’

রমজান কিংবা ঈদ উপলক্ষে কোন পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কোন কারণ নেই জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাকিদের বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য যাতে মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে, অসাধু ব্যবসায়িরা যাতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে- সে জন্য সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে। রমজান উপলক্ষে ন্যায্যমূল্যে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এক কোটি মানুষকে ন্যায্যমূল্যে চালসহ অন্যান্য সামগ্রী দেয়া হচ্ছে। এরপরও দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় অসাধু ব্যবসায়িরা, এমনকি খুচরা বিক্রেতারাও একটি বাজারে একটি পণ্যের দাম এক রকম, আরেক বাজারে অন্য রকম করে ইচ্ছেমত দাম নেয়ার একটা প্রবণতা তৈরি হয়েছে। খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যে এ প্রবণতা পূর্বে দেখা যায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখলাম, মানুষ এ বিষয়ে পূর্বে তুলনায় বহু বেশি সোচ্চার হয়েছে। অহেতুক দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর প্রবণতা রোধ করার ক্ষেত্রে মানুষের সোচ্চার হওয়াটা সহায়ক। একই পণ্য বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন মূল্যে যে বিক্রি হচ্ছে, তা নিয়ে বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকা অনুসন্ধানী রিপোর্ট করেছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সহায়তা চাই, আমাদের সরকার সর্বাত্মক চেষ্ঠা করছে, যাতে কেউ অহেতুক পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে।’