মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

শিরোনাম

ধর্ম/কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসিয়ে রাঙ্গামাটিতে বৈসাবী উৎসবের সূচনা

শুক্রবার, এপ্রিল ১২, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

রাঙ্গামাটি: কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটি জেলায় শুরু হয়েছে বৈসাবি উৎসব। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ১৪টি ক্ষুদ্র নৃ -জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব।

বৈসাবীকে ঘিরে তিন দিনের উৎসবের মধ্যে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) প্রথম দিন সকালে কাপ্তাই হ্রদে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসানো হয়। এটি চাকমাদের বিজু, মারমাদের সাংগ্রাই ও ত্রিপুরাদের বৈসুক উৎসব নামেও পরিচিত। ত্রিপুরারা ফুল ভাসানোর পাশাপশি বয়স্ক স্নান ও বস্ত্র বিতরণ করে এ উৎসবে। সেই সাথে চলে পাহাড়ী ঐতিহ্যবাহী নৃত্যগীত।

সকাল থেকে পাহাড়ী নারীরা বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করে একে একে চলে আসে কাপ্তাই হ্রদে। সৃষ্টিকর্তার আর্শিবাদ প্রার্থনা করে কাপ্তাই হ্রদে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে পানিতে ফুল ভাসিয়ে দেয় তারা। এ সময় ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে এ ফুল ভাসানোর উৎসবে অংশ নেন পাহাড়ি মানুষ।

রাঙ্গামাটির গর্জনতলীতে ফুল ভাসিয়ে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসুক উৎসবের উদ্বোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাংসদ দীপংকর তালুকদার। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ঝিনুক ত্রিপুরা, ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্ঠা প্রীতি কান্তি ত্রিপুরা, জেলা পরিষদের সদস্য বিপুল ত্রিপুরাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ দিকে, রাঙ্গমাটি জেলার কাপ্তাইয়ে তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু উৎসবে যোগ দেন সংরক্ষিত মহিলা সাংসদ জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা। উৎসবের প্রথম দিনকে চাকমারা ফুল বিজু , ত্রিপুরারা বৈসুক ও তঞ্চঙ্গ্যারা ফুল বিষু নামে পালন করছে। জেলা শহর ছাড়াও রাঙ্গামাটির দশ উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীরাও একইভাবে পালন করছে বৈসাবির দিনব্যাপী উৎসব।

রাঙ্গামাটি বৈসাবি উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টু মনি তালুকদার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বৈসাবি উৎসব উপলক্ষে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে রাজবাড়ী ঘাটে কাপ্তাই হ্রদে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসিয়ে উৎসবের সূচনা করেছি। পুরাতন বছরের গ্লানি ভুলে ভবিষ্যতে সুন্দর জীবনের প্রত্যাশায় আমরা সবাই প্রার্থনা করেছি। আগামী বছরগুলোতে যেন পৃথিবীর সব মানুষ ভাল থাকে ও পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সেতুবন্ধন সুদৃঢ় থাকে- এটাই সবার প্রত্যাশা।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) মূল বিজু পালিত হবে। ঐতিহ্যবাহী পাঁজন রান্না করে অতিথি আপ্পায়নের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল বিজুর আনুষ্ঠানিকতা। আগামী ১৪ এপ্রিল পালিত হবে গোজ্যেপোজ্যে।

আগামী ১৫ ও ১৬ এপ্রিল রাঙ্গামাটি চিং হ্লা মং মারি স্টেডিয়ামে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই জলোৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বৈসাবী উৎসবের।