শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

শিরোনাম

বাইডেনের ইফতার-ঈদের দাওয়াত বয়কটের পরিকল্পনা মুসলিম নেতাদের

শুক্রবার, মার্চ ২২, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বাহিনীর অভিযান ও তাদের হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনির নিহত ও আহত হওয়া অব্যাহত থাকায় চলতি বছর হোয়াইট হাউসের ইফতার ও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান বয়কটের পরিকল্পনা নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নেতারা। মুসলিম নাগরিকদের সাথে সৌহার্দ্য রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের একটি পৃথক দপ্তর রয়েছে। কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স (সিএআইআর) নামের সেই দপ্তরটির পরিচালক রবার্ট ম্যাককাও যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সংগঠনগুলোর কাছ থেকে এমন ইঙ্গিত পেয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে ভয়েস অব আমেরিকাকে ম্যাককাও বলেন, ‘যুদ্ধের শুরু থেকেই গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নেতারা। তাদের প্রত্যাশা ছিল- অন্তত রমজানের পূর্বে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে। কিন্তু, দুঃখজনকভাবে সেই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বাইডেন প্রশাসন।’

‘পাশাপাশি তাদের দাবি ছিল, যুক্তরাষ্ট্র যেন ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে। সেই দাবিও পূরণ হয়নি।’

এ দিকে, হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, অন্তর্নিহিত ক্ষোভ ও তার জেরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইফতার ও ঈদের নিমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যানের যে পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নেতারা নিয়েছেন- সে সম্পর্কে বাইডেন প্রশাসন ওয়াকিবহাল। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারিন জেন পিয়েরে জানিয়েছেন, চলতি বছর এখনো ইফতার ও ঈদ উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজনের কোন পরিকল্পনা চুড়ান্ত করেনি হোয়াইট হাউস।

‘আমরা বুঝতে পারছি যে, যুক্তরাষ্ট্রের হাজার হাজার মুসলিম নাগরিকদের জন্য খুবই মনোকষ্টের একটি সময় যাচ্ছে। তবে, হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা নিয়মিত আরব, মুসলিম ও ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের সাথে মত বিনিময় করছেন, তাদের বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। আমাদের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

উল্লেখ্য, রমজান মাসে হোয়াইট হাউসে দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে ইফতার ও ঈদের দিন তাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ের এ সংস্কৃতি প্রথম শুরু হয় ১৯৯৬ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের আমলে। পরবর্তী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের সময়ও এ ধারা অব্যাহত ছিল। তবে, ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর তাতে ছেদ পড়ে। ক্ষমতার চার বছরে হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নেতাদের সম্মানে কোন ইফতার বা ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান আয়োজনের নির্দেশ দেননি তিনি।

২০১৮ ও ২০১৯ সালে অবশ্য হোয়াইট হাউসে ইফতার ও ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান করেছিলেন ট্রাম্প। তবে, সেই অনুষ্ঠান ছিল বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকদের সম্মানে।

২০২০ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর বাইডেন ফের সেই সংস্কৃতি শুরু করেন; ২০২৩ সাল পর্যন্ত ইফতার ও ঈদ উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল হোয়াইট হাউস। কিন্তু, চলতি বছর গাজায় যুদ্ধ ও তাকে কেন্দ্র করে বাইডেন প্রশাসনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমদের ক্ষোভ সব ওলট-পালট করে দিয়েছে।