বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

শিরোনাম

চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন/সাংসদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে

শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

চকরিয়া, কক্সবাজার: কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যানসহ তিন পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে এখনো প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়নি। এরপরও চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ফজলুল করিম ওরফে সাঈদীর পক্ষে তাকে নিয়ে কক্সবাজার-এক আসনের সাংসদ সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম নানা সামাজিক অনুষ্ঠান ও সভায় সরাসরি ভোট চাওয়ার অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাফর আলম।

সরাসরি ভোট চাওয়া সংক্রান্তে একাধিক অনুষ্ঠানের ভিডিও এবং স্থির চিত্রসহ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশন, কক্সবাজার জেলার প্রশাসক, নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জাফর আলম।

লিখিত অভিযোগে এ আসনের সাবেক সাংসদ ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী জাফর আলম উল্লেখ করেছেন- গেল ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রার্থীতা যাচাই অনুষ্ঠানের পর থেকে স্থানীয় সাংসদ সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফজলুল করিম সাঈদীর পক্ষে নানা সামাজিক অনুষ্ঠান ও সভায় অংশ নিচ্ছেন এবং একই সময়ে সরকারি নিরাপত্তা প্রটোকলও ব্যবহার করেছেন। যা নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

অভিযোগে বলা হয়, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণবিধিতে (২২ এর ১ ও ২) বলা আছে, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও কোন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নির্বাচন-পূর্ব সময়ে নির্বাচনি এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনি কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না; নির্বাচনপূর্ব সময়ে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে কোন ব্যক্তি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনি কাজে সরকারি প্রচারযন্ত্র, সরকারি যানবাহন, অন্য কোন সরকারি সুবিধা ভোগ ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে ব্যবহার করতে পারবেন না। কিন্তু বর্তমান সাংসদ নির্বাচনী আচরণবিধির কোন তোয়াক্কাই না করে সরকারি প্রটোকল ব্যবহার করে একের পর এক নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে এখানে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।’

জাফর আলম বলেন, ‘বর্তমান সাংসদ সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম চকরিয়া উপজেলার ভোটার নন। এর পরও তিনি পছন্দের প্রার্থী ফজলুল করিম সাঈদীর পক্ষে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সরাসরি ভোট চাচ্ছেন। এ পর্যন্ত তিনি অন্তত দশটি সামাজিক অনুষ্ঠান ও সভায় সরকারি প্রটোকল ব্যবহার করে সরাসরি ভোট চেয়েছেন। তাই, ব্যাপারটি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ নির্বাচনী প্রচারণা থেকে নিবৃত্ত রাখতে নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এখনো প্রচারণার সময় আসেনি। প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পরেই তো প্রচারণার ব্যাপারটি সামনে আসবে। এর পরও আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনাটা ভিত্তিহীন। কারণ, আমি এখানে সাংসদ হওয়ার পর থেকেই জাফর আলম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে বহু ধরনের মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা ছড়িয়েই যাচ্ছেন।’

সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘আমি যার পক্ষে প্রচারণা করছি বা ভোট চাচ্ছি বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, হয়তো দেখা যাবে সেই প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরেও দাঁড়িয়েছেন। তাহলে অভিযোগের ভিত্তিটা কোথায় থাকল।’

এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, ‘কক্সবাজার-এক আসনের সাংসদ সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম কর্তৃক এক প্রার্থীর পক্ষে আচরণবিধি লঙ্ঘনের যে অভিযোগ এসেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তসাপেক্ষে আচরণবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, পুরো দেশে দ্বিতীয় ধাপের অধীনে আগামী ২১ মে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ এপ্রিল প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পর ২ মে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে।

নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছেন।