বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

শিরোনাম

বিভাগীয় সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে চট্টগ্রামে শ্রুমিক দলের মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

মঙ্গলবার, জুলাই ৪, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

চট্টগ্রাম: আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে জনগণের কোন মূল্য নেই উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করছে না। এখনো তারা নিজেদের আখের গোছানোর জন্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি করে জনগণকে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। শ্রমজীবী মানুষ আজ পরিবার পরিজন নিয়ে দিশেহারা। জনগণের কোন মূল্য আওয়ামী লীগের কাছে নেই। কারণ, তারা ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে। যদি জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে হয়, তাহলে এ সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা ধীরে ধীরে এক দফার আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। সরকার পতনে চট্টগ্রাম থেকেই এক দফার আন্দোলন শুরু হবে।’

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বিকালে সিটির কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে আগামী ১৪ জুলাই চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে বিভাগীয় শ্রমিক দলের মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এএম নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের পরিচালনায় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, এসএম ফজলুল হক, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, হারুনুর রশিদ, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান।

সভায় আবদুল্লাহ আল নোমান আরো বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়া, নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরসহ দশ দফা দাবিতে ‘দেশ বাঁচাতে শ্রমজীবী মানুষের জাগরণ’ শীর্ষক প্রথম সমাবেশটি ১৪ জুলাই চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় কৃষক, শ্রমিক, জেলে ও তাঁতিদের নিয়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে দাবি আদায়ে ছাত্র যুবকদের পাশাপাশি অতীতের মত সারা দেশের শ্রমজীবী মানুষও অংশ নেবে। বিগত ১৫ বছর ধরে অন্যান্য শ্রেণি পেশার মানুষের মত শ্রমিকরাও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে নাভিশ্বাস উঠছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে শ্রমজীবী মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। সরকার ভোটাধিকার হরণ করে দেশের মালিকানা যেমন কেড়ে নিয়েছে, তেমনি শ্রমিক, কৃষকের পেটে লাথি মেরেছে। দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে শ্রমজীবী মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে তারা। কৃষক, শ্রমিক, তাঁতি ও জেলেদের মুক্তির জন্য কাজ করছে বিএনপি।’

মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কাজই হচ্ছে গণতন্ত্রকে হত্যা করা আর বিএনপির কাজ হচ্ছে গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা করা। আজকে সারা দেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়। নিজের ভোট নিজে দিতে চায়। কিন্তু, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এ অবৈধ সংসদ বাতিল করতে হবে। অন্তবর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। এছাড়া, কোন বিকল্প নেই।’

গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, ‘সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে যেমন সাংবাদিকদের হয়রানি করছে; একইভাবে অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন করে শ্রমিকদেরও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এ আইনের মাধ্যমে দ্রুত সাজা দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। তাই, সব শ্রেণি ও পেশার রাজনীতিকদের পাশাপাশি শ্রমিক সমাজও রাজপথে নামবে জনগণের দাবি আদায়ে।’

এসএম ফজলুল হক বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশকে এখন কারাগারে পরিণত করে ফেলেছে। এখানে কারো কোন অধিকার নেই। বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে। তাই, আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’

মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ‘বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে শ্রমিক সমাজ আজ অবহেলিত। শ্রমিকদের দুই বেলা খাওয়ার সুযোগ নেই। আজকে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ও বাসস্থান নেই। বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিক জনতাকে কঠিন আন্দোলনে শরিক হতে হবে।’

শাহাদাত হো‌সেন ব‌লে‌ন, ‘চট্টগ্রাম শেখ হা‌সিনা সরকা‌রের পত‌নের আ‌ন্দোল‌নের জন‌্য প্রস্তুত আ‌ছে। তাই, শ্রমিক সমাবেশ সফল করে আমা‌দেরকে স্বৈরাচারী‌ সরকা‌রের অন‌্যায়, অত‌্যাচার, দুর্নী‌তির বিরু‌দ্ধে দাঁতভাঙ্গা জবাব দি‌তে হ‌বে। আমা‌দের মৌ‌লিক অ‌ধিকার, গণতা‌ন্ত্রিক অ‌ধিকার, ভা‌তের অ‌ধিকার, ভো‌টের অ‌ধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজপ‌থে থাক‌তে হবে।’

আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘দেশ এখন কঠিন সময় পার করছে। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে শ্রমিকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। অথচ সরকার এ শ্রমিকদের জীবন জীবিকাকে কঠিন করে তুলেছে। তাই, এর থেকে পরিত্রাণ পেতে শ্রমিক সমাবেশ থেকে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করতে হবে।’

আবু সুফিয়ান বলেন, ‘চট্টগ্রাম হচ্ছে বিএনপির দূর্ভেদ্য ঘাঁটি। অতীতে চট্টগ্রামের প্রতিটি মহাসমাবেশ সফল হয়েছে। আগামী শ্রমিক সমাবেশে দক্ষিণ জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী যোগ দেবে। এ শ্রমিক সমাবেশ মাইলফলক থাকবে।’

সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, হুম্মাম কাদের চৌধুরী, সাচিং প্রু জেরি, মশিউর রহমান বিপ্লব, উত্তর জেলা বিএনপির সিনিসয়র যুগ্ম আহবায়ক এমএ হালিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনাম, রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুন, বান্দরবন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএন আফসার, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এসএম সাইফুল আলম, এসকে খোদা তোতন, শফিকুর রহমান স্বপন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইউনুস চৌধুরী, বেলায়েত হোসেন, সরওয়ার আলমগীর, কাজী সালাউদ্দিন, আহবায়ক কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেন, এম মঞ্জুর উদ্দিন চৌধুরী, এসএম মামুন মিয়া, নাজমুল মোস্তফা আমিন, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, মোস্তাফিজুর রহমান, ইসহাক চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি মো. শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক মো. আজগর, উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান জসিম, সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরী, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, মহিলা দলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি ও সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, উত্তর জেলার সভাপতি মেহেরুন্নেসা নারগিস, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সরওয়ার উদ্দিন সেলিম, মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, উত্তর জেলার সভাপতি জাহিদুল আফছার জুয়েল, বিভাগীয় শ্রমিকদলের সিনিয়র সহ সভাপতি ইদ্রিছ মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শম জামাল উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আবদুল বাতেন, মহানগর শ্রমিকদলের সভাপতি তাহের আহমেদ, উত্তর জেলার সভাপতি আবদুল মোতালেব চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মহসিন খান তরুণ, খাগড়াছড়ি জেলার মো. আসলাম, বান্দরবান জেলা সভাপতি শুক্কুর আহমেদ, মহিলা শ্রমিকদলের সভাপতি শাহেনেওয়াজ চৌধুরী মিনু, রাঙ্গামাটি শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক কবিরুল ইসলাম, রেলওয়ে শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক এম আর মন্জুর, বিভাগীয় শ্রমিকদলের দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম মজুমদার।