বুধবার, ০১ মে ২০২৪

শিরোনাম

৩০ বছরে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি

শুক্রবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৩

প্রিন্ট করুন
মো. গনি মিয়া বাবুল

মো. গনি মিয়া বাবুল: দেশব্যাপী ক্রমবর্ধমান সড়ক দুর্ঘটনা নিরসনে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজনে ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে ১৯৯৩ সালে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ (নিসচা) নামে একটি সংগঠন। সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে গঠিত নিসচা তার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের সব স্তরের মানুষের সমর্থনে ধন্য হয়ে ওঠে। নিসচা প্রতিষ্ঠার এই ২৯ বছরের মধ্যে জনকল্যাণমুখী সংগঠন হিসেবে তার ব্যাপক কর্মতৎপরতায় দেশের সীমানা ছাড়িয়ে এরমধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পেয়ে গেছে যথেষ্ট পরিচিতি। নিসচা এখন একটি সফল সামাজিক আন্দোলনের নাম। ১৯৯৩ এর ২২ অক্টোবর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মর্মান্তিকভাবে নিহত হন ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন। স্ত্রী বিয়োগের শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে নিসচার কার্যক্রম বর্তমানে সব স্তরে প্রশংসিত হচ্ছে।

উল্লেখ করা যেতে পারে, এরও আগে ১৯৮৮ সালে ইলিয়াস কাঞ্চন স্বয়ং মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। নিজের জীবনের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা ও স্ত্রী বিয়োগের বেদনার বাস্তবতা, ইলিয়াস কাঞ্চনকে উদ্বুদ্ধ করে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বজন হারানো ও ক্ষতিগ্রস্ত পঙ্গু মানুষের পাশে দাঁড়াতে। ক্রমবর্ধমান সড়ক দুর্ঘটনা নিরসনে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে ১৯৯৩ এর ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ শীর্ষক পদযাত্রায় সামিল হন তিনি। সে দিনের সেই পদযাত্রা ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনকে সাংগঠনিক পর্যায়ে রূপদানের পরামর্শ ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন দেশের সাংবাদিক সমাজসহ বিশিষ্টজনেরা। ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ শীর্ষক প্রথম পদযাত্রায় বিভিন্ন সংগঠনসহ সব স্তরের মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণই তাকে এই আন্দোলনে ব্যাপক উৎসাহ যোগায়। প্রথম পথযাত্রা শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিশাল জনসমাবেশে ইলিয়াস কাঞ্চন চালক-মালিক-যাত্রী তথা জনসাধারণের ও সরকারের উদ্দেশ্যে ২২ দফা সুনির্দিষ্ট দাবি উত্থাপন করেন।

সড়কের মড়ক থেকে জাতিকে উদ্ধারের জন্য ইলিয়াস কাঞ্চন ঢাকায় ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ শীর্ষক পদযাত্রা করেই ক্ষান্ত হলেন না; তিনি তার দাবি নিয়ে ছুটে বেড়াতে থাকলেন দেশের নানা অঞ্চলে। আয়োজন করতে থাকলেন পথযাত্রার। তুলে ধরতে থাকলেন তার দাবিগুলো। ইলিয়াস কাঞ্চন তার নিরাপদ সড়ক চাই দাবিকে সংগঠনে রূপান্তরিত করলেন। ১৯৯৩ এর ১ ডিসেম্বর এফডিসি থেকে প্রেস ক্লাব পর্যন্ত পদযাত্রার মধ্যদিয়ে যে আন্দোলনের যাত্রা শুরু সাংগঠনিক রূপ পাওয়ার আগেই সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে। শুধু ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ পদযাত্রাই নয়, পদযাত্রার শুরুতে অথবা শেষে সমাবেশে ২২ দফা প্রস্তাব উত্থাপন, সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিরাপদ সড়কের দাবিতে জনসচেতনতা সৃষ্টির প্রচেষ্টা সবকিছু মিলিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন ও তার নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন তথা নিসচা সংগঠন সামাজিক সংগঠন হিসাবে পেতে থাকে দৃঢ়ভিত্তি।

জাতীয় পর্যায়ে নিরাপদ সড়ক দিবস পালনের দাবি উত্থাপনের পাশাপাশি নিসচার পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতি বছর ২২ অক্টোবর নিরাপদ সড়ক দিবস পালনের উদ্যোগ নেয়ার জন্য জাতিসংঘের কাছে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এই ব্যাপারে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিকভাবে নিরাপদ সড়ক দিবস পালনে নিমিত্তে ২০০৪ সালের ৭ এপ্রিল সভার আয়োজন করে ও সেই সভাতে নিসচার প্রতিনিধিকে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানান।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০০৬ সাল থেকে ‘২২ হতে ২৯ এপ্রিল’ নিরাপদ সড়ক সপ্তাহ প্রতি বছর পালিত হচ্ছে।

সড়ক দুর্ঘটনা শতকরা ৫০ ভাগ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে জাতিসংঘ ২০১০ থেকে ২০২০ সালকে সড়ক নিরাপত্তা দশক ঘোষণা করে। কিন্তু, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় সময়সীমা ২০৩০ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। এই সময়ে মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা শতকরা ৫০ ভাগ কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিসচা’র এসব সাফল্য সড়ক সন্ত্রাস থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য নিসচা’র উদ্যোগ ও কর্মৎপরতাকে আরো উৎসাহ যোগায়। ২২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিকভাবে নিরাপদ সড়ক দিবস হিসাবে পালনের ঘোষণা হলে নিসচার আন্দোলন সার্থক হবে বলে বিজ্ঞমহল মনে করেন। নিসচার পক্ষ থেকে পদযাত্রা, সংবাদ সম্মেলন, সেমিনার, আলোচনা সভা, জনসভার মত কর্মসূচির পাশাপাশি দাবি বাস্তবায়নে স্মারকপত্র পেশ করা হয়েছে। পাশাপাশি, সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা দেয়ার লক্ষ্যে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের প্রয়োজনীয় স্থানে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠারও পরিকল্পনা রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, নিসচার উদ্যোগে এসএসসি পাস বেকার যুবকদের দক্ষ চালক হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘নিসচা ড্রাইভিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট’। এই ইনস্টিটিউটে বিনামূল্যে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ১৯৯৩ সাল থেকে নিসচা আন্দোলনের শুরু সাংগঠনিক রূপ দেয়ার পর কেন্দ্রীয় সংগঠনের পাশাপাশি পুরো দেশে গড়ে উঠেছে এর অসংখ্য শাখা সংগঠন। নিসচার দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২২ অক্টোবরকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও অনুমোদন করা হয়। ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর ‘সাবধানে চালাব গাড়ি, নিরাপদে ফিরব বাড়ি’ প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশে প্রথম বারের মত সরকারিভাবে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালন করা হয়।

প্রতি বছর দিবসটিকে ঘিরে সড়ক দুর্ঘটনারোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকারিভাবে ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালন করা হলেও ক্রমবর্ধমান সড়ক দুর্ঘটনা নিরসন করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ বছর সরকারিভাবে ষষ্ঠ বারের মত দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘আইন মেনে সড়কে চলি, নিরাপদে ঘরে ফিরি’। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২২ উপলক্ষে সরকারিভাবে ঢাকাসহ প্রতিটি জেলায় ও উপজেলায় নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধের দাবিতে সোচ্চার নিসচার উদ্যোগে ১ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মাসব্যাপি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।

উল্লেখ্য যে, নিসচা দিবসটি উপলক্ষে মাসব্যাপি সচেতনতামূলক সেমিনার, আলোচনা, র‌্যালি, চালক প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের সাথে মত বিনিময়, নিরাপদ নামে স্মরণিকা, পোষ্টার-লিফলেট প্রকাশ ও বিতরণ প্রভৃতি কর্মসূচি সফলভাবে পালন করেছে।

সামাজিক অলাভজনক সংগঠন হিসেবে নিসচা দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে সড়ক দুর্ঘটনারোধে মানুষকে সচেতন করে আসছে। নিসচা সফলতার ২৯ বছর পেরিয়ে চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর ৩০ বছরে পদার্পণ করছে। নিসচার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি প্রয়াত জাহানারা কাঞ্চনকে, যার আত্মত্যাগে নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের সূচনা। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। নিসচার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। নিসচার সাথে বর্তমানে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশে ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সড়ক দুর্ঘটনারোধে যারা কাজ করছেন তাদেরকেও জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।

বর্তমান পর্যায়ে নিসচার কার্যক্রম যেমন সাফল্যের মুখ দেখেছে, তেমনি সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিসচার কার্যক্রম আরো প্রসারিত ও গতিশীল করে তোলার বিষয়টিও হয়ে উঠছে জরুরি। সঙ্গত কারণেই আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়টিও হয়ে উঠছে অতি গুরুত্বপূর্ণ। কার্যক্রম পরিচালনায় আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যকে সামনে রেখে এরমধ্যে নিসচা সমাজকল্যাণ অধিদফতর ও এনজিও ব্যুরোর অনুমোদন পেয়েছে। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা নিরসন কিংবা শূন্যমাত্রায় নিয়ে আসা সম্ভব।

সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণগুলো হচ্ছে- চালকের অসতর্কতা, অসচেতনতা, বেপরোয়া বা অনিয়ন্ত্রিত গতিতে গাড়ি চালানো ইত্যাদি। এ ছাড়া চালকরা অনেক সময় ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত অবস্থায় গাড়ি চালায়। ফলে, এক সময় নিজের অজান্তেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। তাই, চালকদের এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। কোনভাবেই অসুস্থ বা ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো যাবে না। প্রত্যেক মানুষেরই পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম প্রয়োজন। অন্য দিকে, সড়ক দুর্ঘটনার আরো একটি অন্যতম কারণ চালকদের ওভারটেকিং প্রবণতা। সাধারণত রাস্তায় ধীরগতির গাড়িগুলোকে ওভারটেকিংয়ের প্রয়োজন পড়ে। এ সময় হর্ন বাজিয়ে সামনের গাড়িকে সংকেত দিতে হয়। কিন্তু, অনেক সময় সংকেত না দিয়ে একজন আরেকজনকে ওভারটেক করার চেষ্টা করে, যার ফলে সামনের দিক থেকে আসা গাড়ি বের হতে না পেরে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সড়ক দুর্ঘটনার আরেকটি কারণ হল ত্রুটিপূর্ণ সড়কব্যবস্থা। মহাসড়কগুলোতে বাঁক থাকার কারণে সামনের দিক থেকে আসা গাড়ি দেখতে না পেয়ে অনেক চালক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। রাস্তার পাশে হাট-বাজার স্থাপন এবং ওভারব্রিজ না থাকাও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

আমরা সড়কে আর মৃত্যু দেখতে চাই না। এ জন্য সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। অনিয়মকে কোনভাবেই প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। দেশের সড়ক-মহাসড়কে নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে পারলে দুর্ঘটনার হার যেমন কমবে, তেমনি দেশে আহত ও পঙ্গু মানুষের সংখ্যা কমে আসবে। সড়ক দুর্ঘটনার মত অভিশাপ থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন সকলের সদিচ্ছা।

সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর লক্ষ্যে সরকার সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ প্রণয়ন ও গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের থেকে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই আইন ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। কিন্তু, আইন পাস হওয়ার চার বছর পূর্ণ হলেও তা বাস্তবায়নে বিধিমালা তৈরি হয়নি। এই কারণে আইনটি পুরোপুরি এখনো কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। ফলে, আইনের বাস্তবায়ন ও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। তাই, সড়ক পরিবহন বিধিমালা দ্রুত প্রণয়ন এবং এর যথাযথ বাস্তবায়ন করা জরুরি। সড়ক দুর্ঘটনারোধে চালক যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সচেতনতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য।

লেখক: মো. গনি মিয়া বাবুল
শিক্ষক, গবেষক, কলাম লেখক ও সংগঠক)
যুগ্ম-মহাসচিব, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)
কাকরাইল, ঢাকা ১০০০।