বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

শিরোনাম

জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণ নেতাদের আবেগ ও উদ্ভাবন অমূল্য সম্পদ

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: জলবায়ু ফ্রন্টে তরুণ নেতাদের প্রশংসা করে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, ‘পৃথিবীর সামনে উদ্ভূত জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের প্রতিশ্রুতি সত্যিই প্রশংসনীয় ও অনুপ্রেরণাদায়ক। সবাইকে অবশ্যই তাদের ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি আপনাদের নিজ নিজ দেশে কমিউনিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে আপনাদের উৎসর্গের জন্য সব জলবায়ু চ্যাম্পিয়নদের প্রশংসা করি।’

২৬-২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস, একটি যুব-নেতৃত্বাধীন সামাজিক উদ্যোগ জেনল্যাবের সাথে সহযোগিতায়, ক্লাইমেট অ্যাকশন চ্যাম্পিয়ন্স নেটওয়ার্ক (সিএসিএন) বাংলাদেশ কনক্লেইভের আয়োজন করে। এর লক্ষ্য ছিল বায়ুর মান উন্নত করায় তরুণ জলবায়ুকর্মীদের সাথে সহযোগিতার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করা। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ৫০ জন জলবায়ু উদ্যমী তরুণ এই ইভেন্টে যোগ দেয়। পিটার হাস সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

তিনি তরুণ প্রতিনিধিদের পরিবেশ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় কাজ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ে পদক্ষেপ নিয়ে ও সীমানা পেরিয়ে কাজ করার মাধ্যমে এই তরুণ নেতারা তাদের সম্প্রদায়কে দেখিয়ে দিচ্ছেন যে, ভাগ করা সমৃদ্ধির জন্য তাদের একে অপরের প্রয়োজন।

হাস বলেন, ‘আপনাদের আবেগ, উৎসর্গ ও উদ্ভাবনী চিন্তা আমাদের সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলোর একটি মোকাবিলার অমূল্য সম্পদ। ইতিবাচক কাজ চালিয়ে যান ও জেনে রাখুন যে, পৃথিবী আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা দেখছে ও সমর্থন করছে। একইসাথে আমরা সকলের জন্য আরো টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গড়ে তুলতে পারি।’

ক্লাইমেট অ্যাকশন চ্যাম্পিয়নস নেটওয়ার্ক (সিএসিএন) হল ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের অর্থায়নে আঞ্চলিক একটি উদ্যোগ। যার লক্ষ্য এই অঞ্চলে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য তরুণ নেতৃত্বকে প্রশিক্ষণ দেয়া ও ক্ষমতায়ন করা।

ঢাকায় এই আসরে, ভারতীয় উপমহাদেশে বায়ু দূষণ মোকাবেলায় অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সুযোগ সম্পর্কে জানাতে যোগ দেন বাংলাদেশ ও আঞ্চলিক জলবায়ু ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা ।

হাস বলেন, ‘ভারতীয় উপমহাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিবেদিত পুরো অঞ্চলের চ্যাম্পিয়নদের দেখাটা অনুপ্রেরণাদায়ক৷ আমাদের গ্রহের জন্য একটি টেকসই ও স্থিতিস্থাপক ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য আপনার নিরলস প্রচেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, তারা সবাই একে অপরের কাছ থেকে শিখতে পারে।

হাস বলেন, ‘ঢাকার মত শহরে বায়ু দূষণের স্থানীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমাধান এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন। ঢাকার বায়ুর গুণমান সংক্রান্ত সমস্যাগুলোকে সমাধান করা শুধুমাত্র জনস্বাস্থ্যের বিষয় নয়, শহরের দীর্ঘ মেয়াদী স্থায়িত্ব ও জীবনযাত্রা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাইডেন প্রশাসন সাম্প্রতিক আমেরিকান ক্লাইমেট কর্পস এবং অন্যান্য উদ্যোগ চালু করেছে। এসব উদ্যোগ তরুণদের পরিবেশবান্ধব পরিচ্ছন্ন শক্তি, সংরক্ষণ ও জলবায়ু সহনশীলতার দক্ষতা প্রশিক্ষণে নিবেদিত; যা জলবায়ু সংকটকে সামনাসামনি মোকাবিলা করবে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জলবায়ু ঝুঁকি মডেলিং ও প্রস্তুতির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রচেষ্টার একটি অপরিহার্য উপাদান। এর মাধ্যমে আমরা বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর আলোচনায় নিযুক্ত করি। যার মধ্যে আরো ঘন ঘন ও গুরুতর আবহাওয়া বিপর্যয়, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও বৃষ্টিপাতের ধরণগুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’

বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসন গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলার জন্য একটি বিস্তৃত পদক্ষেপ উন্মোচন করেছে। যার মধ্যে প্যারিস চুক্তিতে পুনরায় যোগদান, পরিচ্ছন্ন শক্তি অবকাঠামো, জ্বালানি দক্ষতা, বৈদ্যুতিক যানবাহন, পরিবেশগত ন্যায়বিচার, নিয়ন্ত্রক কর্ম, জলবায়ু কূটনীতি, কার্বন মূল্য নির্ধারণ ও আর্থিক প্রণোদনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা তরুণ জলবায়ু চ্যাম্পিয়নদের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি উল্লেখযোগ্য ও ইতিবাচক পার্থক্য তৈরি করতে সমর্থন করি।’

‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘‘জলবায়ু কোন ট্রেডিং কার্ড নয়, এটা আমাদের ভবিষ্যত।’’

হাস জানান, তিনি ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন এটিও স্পষ্ট করেছেন যে, কোন দেশ একা জলবায়ু সংকট সমাধান করতে পারবে না।